সিনেমা হলে আবেগপ্রবণ লালকৃষ্ণ আদবাণী। ছবি: টুইটারের ভিডিয়ো থেকে
আবেগপ্রবণ ‘লৌহপুরুষ’। চোখের কোণে জল!
তবে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন অধরা থাকা, রাজনৈতিক সন্ন্যাস নেওয়া কিংবা বিজেপির ‘উপেক্ষা’— এ সব কোনও রাজনৈতিক কারণে নয়। লালকৃষ্ণ আডবাণী কেঁদে ফেললেন বিধু বিনোদ চোপড়ার সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘শিকারা: দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব কাশ্মীরী পন্ডিতস’ দেখে। হলের মধ্যেই পরিচালক বিধু বিনোদকে চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে আবেগাপ্লুত নবতিপর বিজেপি নেতা আডবাণীর পাশে বসে তাঁকে সান্ত্বনা দিতে দেখা গেল।
গত শতাব্দীর নয়ের দশকের গোড়ায় কাশ্মীরী পণ্ডিতদের উপত্যকা থেকে বিতাড়নের পটভূমিতে তৈরি বিধু বিনোদ চোপড়ার ছবি ‘শিকারা’ মুক্তি পেয়েছে শুক্রবারই। দিল্লিতে সেই ছবির স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যাবস্থা করেছিলেন পরিচালক-প্রযোজকরা। তাতে আমন্ত্রিত ছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী।
সেই ছবি দেখার সময়েই শেষের দিকে একটি দৃশ্যে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি প্রবীণ আডবাণী। তাঁর কাছাকাছি বসা পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়াকে বিষয়টি লক্ষ করে উঠে আডবাণীর কাছে এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। অন্যরাও তাঁর কাছে চলে আসেন।
আরও পডু়ন: ‘এগজিট পোল একজ্যাক্ট নয়’, সমীক্ষার ফল উড়িয়ে দাবি বিজেপির
গোটা এই পর্ব ক্যামেরাবন্দি হওয়ার পর সেটি শেয়ার করা হয় ‘বিধু বিনোদ চোপড়া ফিল্মস’-এর টুইটার হ্যান্ডলে। তার পরই সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চার কেন্দ্রে উঠে এসেছে। নেটনাগরিকদের একাংশ বর্ষীয়ান আডবাণীর প্রশংসা করেছেন।
১৯৮৯ এর শেষের দিক থেকে শুরু করে পরের বছরের গোড়ার দিকে কী ভাবে জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ) এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর অত্যাচার ও হুমকির জেরে কাশ্মীরের পণ্ডিত এবং হিন্দুদের উপত্যকা ছাড়তে হয়েছিল, সেই ঘটনার উপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে ‘শিকারা: দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব কাশ্মীরী পণ্ডিতস’। আদিল খান ও সাদিয়া অভিনীত এই ছবির পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়া নিজেও সেই ঘটনার শিকার।
তবে ‘শিকারা’ নিয়ে সমালোচনার মুখেও পড়েছেন পরিচালক। সিনেমার গল্পে বাস্তবকে তুলে ধরা হয়নি বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। বিতাড়িত কাশ্মীরী পণ্ডিতদের একাংশও ফিল্মের সমালোচনায় মুখর। তবে সিনেমাটোগ্রাফির প্রশংসাও করেছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: অভিনেত্রী কল্কি এবং তাঁর বয়ফ্রেন্ডের সংসারে এল নতুন অতিথি
অন্য দিকে, আডবাণী বর্তমানে রাজনৈতিক জীবন থেকে কার্যত অবসর নিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ ব্রিগেড বিজেপিতে তাঁকে যোগ্য সম্মান দেয়নি বলে রাজনৈতিক মহলে অভিযোগ বরাবরের। যদিও মোদী-শাহরা তা মানেন না। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে বাজপেয়ী জমানার উপ-প্রধানমন্ত্রী আডবাণীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিজেপির মার্গদর্শকমণ্ডলীতে। তবে তখনও তিনি গুজরাতের গাঁধীনগর কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে আর তাঁকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। তার পর থেকেই কার্যত রাজনৈতিক সন্ন্যাস নিয়েছেন ২০০৯ সালে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ‘লৌহপুরুষ’ আডবাণী।