দলিত-আইন নিয়ে শীর্ষ আদালতের রায়ে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে ফের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্র।
তফসিলি জাতি-উপজাতিদের নিগ্রহ রুখতে ১৯৮৯ সালের আইন নিয়ে দু’দিন আগেই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা তো বটেই, বিজেপির দলিত নেতারাও এই রায়ে ক্ষুব্ধ। তাঁদের মতে, দলিতদের হাতে আগে যে অধিকার ছিল, শীর্ষ আদালতের রায়ে তা খর্ব হয়েছে।
কংগ্রেসের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী-মোহন ভাগবতরা ‘দলিত-বিরোধী’ বলেই সরকার সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে আইন লঘু করার আর্জি জানিয়েছে। এর মধ্যেই আজ দুপুরে সংসদে হাজির হন রাহুল গাঁধী। সরকারের উপর চাপ বাড়াতে দলিত-প্রশ্নে বিরোধীদের একজোট করতে চান তিনি। কাল কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে কথা হতে পারে। কাল গাঁধী মূর্তির সামনে কংগ্রেস সাংসদরা বিক্ষোভ দেখাবেন।
বিজেপির দলিত নেতারা গত কালই সামাজিক ন্যায় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ক্ষোভ জানান। তার মধ্যেই বিজেপির বিড়ম্বনা বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য তথা লোক জনশক্তি পার্টির রামবিলাস পাসোয়ান আজ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে তাঁরা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হবেন। সরকারও যেন এক আর্জি পেশ করে।
ঘরে-বাইরে চাপের মুখে আজ মোদী সরকারের এক শীর্ষ মন্ত্রী বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে এই মামলাটি নিয়ে সরকার নতুন করে পর্যালোচনা করবে। দরকার হলে ফের রিভিউ পিটিশন পেশ করা হবে। আদালতে যখন এই মামলাটি চলছিল, তখন সরকারি স্তরে এটি নিয়ে আলোচনা হয়নি।’’ বিজেপির সমস্যা হল, দলিতদের খুশি করতে গেলে উচ্চবর্ণরা রুষ্ট হবে। আবার দলিতদের অধিকার খর্বের বার্তা গেলেও ভোটে লোকসান হবে।
এই পরিস্থিতিতে দু’দিন পরেও অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেনি কেন্দ্র। আজ আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ সরাসরি উত্তর এড়িয়ে বলেন, ‘‘বিষয়টি পর্যালোচনা করে সরকার ও দলের পক্ষ থেকে শীঘ্রই বক্তব্য পেশ করা হবে।’’ পাল্টা কংগ্রেসের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট সরকারের মত চেয়েছিল এবং তার ভিত্তিতে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল আদালতে মতামতও জানিয়েছেন। এর পরেও সরকার কী করে বলে যে তারা জানত না? বিতর্ক থেকে বাঁচতেই সরকার এখন এ সব বলছে।