জে পি নড্ডা ফাইল চিত্র
একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ও উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের মন্ত্রিসভায় রদবদল ও সম্প্রসারণ নিয়ে তৎপরতার মধ্যেই আগামী বছরের গোড়ায় হতে চলা ৫ রাজ্যের নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করলেন বিজেপি নেতৃত্ব।
আজ দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যের দলীয় সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্রের মতে, বৈঠকে প্রতিটি রাজ্যের সভাপতিকে দলের প্রস্তুতি নিয়ে নিজেদের রাজ্য ইউনিটের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন নড্ডা। ১০ জুলাই ৫ রাজ্যের প্রস্তুতি কেমন তা জানতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সভাপতিদের সঙ্গে ফের বৈঠকে বসবেন তিনি। বিজেপি সূত্রের মতে, চলতি মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এবং যোগী মন্ত্রিসভার বিস্তার ও রদবদল হওয়ার কথা। তার পরেই আগামী বছর নির্বাচন হতে যাওয়া উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুর ও পঞ্জাবের পরিস্থিতি আলোচনা ও নির্বাচনী রণকৌশল ঠিক করতে বৈঠকে বসবেন নড্ডা। সূত্রের মতে, আজ নড্ডা ভোটমুখী রাজ্যের নেতাদের অবিলম্বে নিজেদের রাজ্যে শক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে নতুন কর্মীদের দলে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অভিযান শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। যে ভর্তি অভিযান চলবে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ঠিক হয়েছে, ভোটমুখী রাজ্যের নেতারা নিজেদের মধ্যে চিন্তন বৈঠক করার পরে প্রতিটি রাজ্যের প্রতিনিধিদের একটি ছোট দল দিল্লিতে এসে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবে। রাজ্যের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোটের রণকৌশল ঠিক করবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
নির্বাচনী প্রস্তুতির সঙ্গেই মন্ত্রিসভার সম্ভাব্য রদবদল নিয়েও প্রবল তৎপরতা বিজেপি শিবিরে। রাজনাথ সিংহ, নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পাশাপাশি অমিত শাহ শনি ও রবিবার দলের প্রায় ২৫-৩০ জন সাংসদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মন্ত্রিসভার সম্ভাব্য রদবদল নিয়ে আলোচনা হয় সেখানে। ভোটমুখী গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ছাড়াও ২০২২-এ নির্বাচন হতে যাওয়া গুজরাত ও হিমাচলপ্রদেশের সাংসদেরা ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। জাতপাতের ভিত্তিতে মন্ত্রিসভায় কী ধরনের রদবদলের আবশ্যকতা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া দলের ভাবমূর্তি উদ্ধারে সাংসদের ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন শাহ। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দলীয় কর্মীরা যাতে মানুষের পাশে থাকে তা নিশ্চিত করতেও নির্দেশ দেন শাহ। সূত্রের মতে, চলতি মাসেই মন্ত্রিসভার রদবদল সেরে ফেলতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। বর্তমানে মোদী মন্ত্রিসভায় ২১ জন মন্ত্রী রয়েছেন। যাঁদের অনেকের একাধিক দায়িত্ব রয়েছে। যা নতুন মুখদের হাতে তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী মোদী-শাহ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এই মুহূর্তে এগিয়ে রয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, সুশীল মোদী, সর্বানন্দ সোনোয়াল। এ ছাড়া নীতীশ কুমারের দল দু’টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আসন চেয়ে রেখেছে। সেই দাবি মানলে প্রতিমন্ত্রীর পদ পাবে এলজেপি। এ দিকে মন্ত্রিসভায় স্থান চেয়ে ইতিমধ্যেই দরবার জানিয়ে রেখেছে উত্তরপ্রদেশের নিষাদ পার্টি ও আপনা দল। উত্তরপ্রদেশের জাতপাতের সমীকরণ ও আসন্ন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে সেই দাবি অনেকাংশেই মেনে নেওয়ার পক্ষে বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভায় হারলেও, বাংলা যে এখনও তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে তা বোঝাতে মন্ত্রিসভায় রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর ভাবনাচিন্তা চলছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হতে পারেন দিলীপ ঘোষ। সে ক্ষেত্রে অবশ্য রাজ্য সভাপতি পদে রদবদল ঘটা নিশ্চিত। অনেকের মতে, দিলীপকে মন্ত্রী করে দিল্লি নিয়ে এসে পশ্চিমবঙ্গে হারের পর থেকে বিজেপিতে যে অশান্তি চলছে তাতে জল ঢেলে দেওয়ার কৌশল নিতে পারেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মন্ত্রিত্বের দৌড়ে রয়েছেন উত্তরবঙ্গের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও।