চন্দ্রবাবু নায়ডু
এনডিএ থেকে বেরোনো ইস্তক নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অপব্যবহারের অভিযোগ তুলছিলেন। তাঁর দল তেলুগু দেশমের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে আয়কর হানার পরে আয়কর অফিসারদের পুলিশি নিরাপত্তাও তুলে নিয়েছিলেন। এ বার চন্দ্রবাবু নায়ডু অন্ধ্রপ্রদেশে সিবিআইয়ের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার পরে বিজেপি মনে করছে, এক ঢিলে তিন পাখি মারতে চাইছেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী।
এক, চন্দ্রবাবু ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ আছে। সেই তদন্ত থেকে বাঁচতেই এমন সিদ্ধান্ত।
দুই, রাজ্যে সিবিআইয়ের যা কাজ, তা এখন পুলিশের গোয়েন্দাদের সামলাতে বলেছেন চন্দ্রবাবু। ফলে এখন কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের বিরুদ্ধে হানা দিয়ে মোদীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে পারে অন্ধ্র। যদিও আদালতের নির্দেশে সিবিআই এখনও রাজ্যে ঢুকে তদন্ত করতে পারবে।
এবং তিন, সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির কাছে অন্ধ্র সরকারের বিরুদ্ধে তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন জগন্মোহন রেড্ডি। চন্দ্রবাবু ভেবেছেন, তাঁর সিদ্ধান্ত আদালতে খারিজ হলেও ভোটে তিনি শহিদের মর্যাদা পেতে পারেন।
গত ৮ নভেম্বর রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি এ আর অনুরাধার জারি করা গোপন বিজ্ঞপ্তিতে সিবিআইকে দেওয়া ‘জেনারেল কনসেন্ট’ প্রত্যাহার করে নেয় অন্ধ্র সরকার। অর্থাৎ রাজ্যের অনুমতি ছাড়া কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত কিংবা হানা চালাতে পারবে না সিবিআই। যে বিজ্ঞপ্তির কথা শুনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ঠিক করেছেন চন্দ্রবাবু। দিল্লিতে কংগ্রেসও বলেছে, নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং অজিত ডোভাল সিবিআইকে ‘প্রাইভেট সেনা’ বানিয়ে ফেলেছেন। অমিত শাহ ফোন করে সিবিআইকে নির্দেশ দেন, কোথায় হানা দিতে হবে।
রাহুল গাঁধীকে মোদীর বিরুদ্ধে জোট গড়তে উদ্যোগী হতে বলে ক’দিন আগেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন চন্দ্রবাবু। আজ দিল্লিতে বিজেপি মুখপাত্র জি ভি এল নরসিংহ রাও বলেছেন, ‘‘সব চেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দলগুলি মহাজোট তৈরি করেছে, যাতে দুর্নীতি ফাঁস না হয়।’’ কংগ্রেসের মতো তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধেও যে দুর্নীতির মামলা চলছে, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
সিবিআই অবশ্য আজ বলেছে, এখনও তারা নির্দেশ হাতে পায়নি। পেলে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে। ডিরেক্টর অলোক বর্মা ও স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা ছুটিতে যাওয়ার পরে সিবিআই প্রধানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন নাগেশ্বর রাও। সিভিসি-র তদন্তেও বর্মাকে ক্লিনচিট দেওয়া হয়নি। যে সিভিসির প্রধান কে ভি চৌধুরি। দু’জনেই অন্ধ্রের। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের প্রশ্ন, সিবিআইয়ের কার্যনির্বাহী প্রধান এবং সিভিসি প্রধান তাঁর বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে পারেন ভেবেই চন্দ্রবাবু এই পদক্ষেপ করেননি তো!