সুনীল দেওধর এবং হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
ঠিক এক মাস আগে বলেছিলেন, ‘‘আমরা ভাল ফল করতে এখানে আসিনি। জিততে এসেছি!’’ জয়ের রং মেখে আজ আর চেনাই যাচ্ছিল না মুখটা! ঘোষণা মিলিয়ে দেওয়ার আনন্দ আরও আলো এনে ফেলছিল তাঁর রঙিন মুখে। প্রশ্ন শেষ করার আগেই সুনীল দেওধর বলে দিলেন, ‘‘একা আমায় নিয়ে পড়়বেন না! ত্রিপুরায় আমাদের কিছুই ছিল না। কাউকে না কাউকে শুরু করতে হতো। বিজেপি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিল।’’
বিধানসভা ভোটের ফল বলে দিচ্ছে, দলের দেওয়া দায়িত্ব পালনে চুটিয়ে সফল ত্রিপুরায় বিজেপি-র পর্যবেক্ষক। মহারাষ্ট্র থেকে বারাণসী হয়ে ডেরা বেঁধেছিলেন আগরতলায়। বাড়়ি ভাড়়া নিয়ে পড়়ে থেকে কাজ চালানোর মতো বাংলা শিখেছেন। ত্রিপুরার পাট চুকিয়ে মহারাষ্ট্রে চলে যাওয়া বিপ্লব দেবকে এখানে দলের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য উত্তর-পূর্বের ভারপ্রাপ্ত বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবকে রাজি করিয়েছেন। কলকাতার মানিকতলা থেকে অভিজিৎ (বুম্বা) পালকে খুঁজে বার করেছেন মানিক সরকারের আদলে এক চরিত্রের উপরে ছবি তৈরি করানোর জন্য! প্রায় তিন বছরের কঠোর পরিশ্রম সুফল এনে দেওয়ার দিন এ হেন দেওধর উদার কণ্ঠেই বলছেন, ‘‘কৃতিত্ব দিতে হলে বিপ্লবকেই দিন না! ও-ই তো সভাপতি।’’
প্রতি বুথ পিছু পাঁচ জন করে ‘শক্তি কেন্দ্র বিস্তারক’ বসিয়ে দেওধর যখন ত্রিপুরায় সংগঠনের ইটের পর ইট বুনছেন, পাশের রাজ্য থেকে আরও এক জন তাঁর সঙ্গে হাত লাগিয়েছিলেন। অসমের মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। বিজেপি-র তরফে বিধানসভা ভোটের দায়িত্ব ছিল তাঁরই। দেওধর যখন সংগঠনে নজর দিয়েছেন, হিমন্ত তখন বিনিয়োগ করেছেন প্রচার আর চমকের পিছনে। রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা, ত্রিপুরার মহারাজা প্রদ্যোত কিশোর মানিক্যের কাছে ভোটের আগে দেওধরকে নিয়ে হাজির হয়ে যাওয়া ছিল হিমন্তেরই পরিকল্পনা।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় দৌড়ে এগিয়ে বিপ্লবই
বিজেপি-র নেতাদের মধ্যে হিমন্তই আজ সকালে সর্বাগ্রে দাবি করেছিলেন, ‘‘আমরা সরকার গড়়ব!’’ এত দিন চার্টার্ড বিমানে গুয়াহাটি-আগরতলা করেছেন। ত্রিপুরার সরকার নিশ্চিত হতেই হিমন্ত শিলঙে! পরের গন্তব্য পেয়ে গিয়েছেন!