গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আন্দোলনের নামে পরিস্থিতি তাতিয়ে তুলছে খলিস্তানি জঙ্গিরা। রাজধানীতে পাঁচ দিন ব্যাপী কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে এত দিন এমনই অভিযোগ করছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। এ বার তার সঙ্গে মাওবাদী সংযোগের ‘অভিযোগ’ও উঠল। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক স্বার্থে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল তাতে মদত জোগাচ্ছেন বলেও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি।
কৃষক আন্দোলনে কেজরীবালের নাম টেনে এনেছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। সোমবার টুইটারে তিনি লেখেন, ‘২৩ নভেম্বর নয়া কৃষি আইন নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল অরবিন্দ কেজরীবাল নেতৃত্বাধীন দিল্লি সরকার। তা কার্যকর করতেও শুরু করে দিয়েছিল তারা। কিন্তু খলিস্তানি এবং মাওবাদীরা আইনের বিরোধিতায় এগিয়ে আসতেই, রাজধানীকে ছারখার করার সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন। কৃষকদের নিয়ে কখনওই মাথাব্যথা ছিল না। গোটাটাই রাজনীতি’।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক নিযুক্ত হয়েছেন মালব্য। কেজরীবালের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে দিল্লি সরকারে কৃষি আইন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তির কপিও টুইটারে তুলে ধরেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ২৭০ র্যাঙ্ক করেও একটা ভুল ক্লিকে আইআইটি আসন হাতছাড়া পিতৃ-মাতৃহীন তরুণের
তাঁর এই অভিযোগের জবাব দিয়েছেন আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা রাঘব চাড্ডা। তিনি বলেন, ‘‘এই দুঃসময়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো যদি রাজনীতি হয়, তাহলে আমরা দোষী। তিনটি কালো আইন প্রত্যাহার করার দাবি জানানো যদি রাজনীতি হয়, তাহলে দোষী আমরা। আমরা কৃষকদের পাশে আছি। কৃষকরা আন্দোলনে নেমেছেন। তাঁদের পদক্ষেপে সমর্থন রয়েছে আমাদের।’’
ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের দাবিতে পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড থেকে হাজার হাজার কৃষক আন্দোলন টেনে এনেছেন রাজধানীর উপকণ্ঠে। তবে মালব্য একা নন, কৃষক আন্দোলনে খলিস্তানি সংযোগ রয়েছে বলে এর আগে অভিযোগ করেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরও। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োর উল্লেখ করে বলেন বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর রয়েছে, ভিড়ের মধ্যে অবাঞ্ছিত লোকজনও রয়েছে। উপযুক্ত প্রমাণ পেলেই বিশদ তথ্য সামনে আনা হবে। খলিস্তানপন্থী স্লোগানও উঠেছে। একটি ভিডিয়োয় বলতে শোনা গিয়েছে, ‘ইন্দিরা গাঁধীর ওই হাল করলে, মোদীর কেন নয়?’’ বিরোধী শিবিরের রাজনীতিকরা কৃষকদের উস্কানি জোগাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে ওআইসি-র বিবৃতি, নাম না করে করে পাকিস্তানকে তোপ ক্ষুব্ধ ভারতের
উত্তরাখণ্ডের বিজেপি নেতা দুষ্যন্তকুমার গৌতম আবার বলেন, ‘‘এই বিক্ষোভের সঙ্গে কৃষকদের কোনও সম্পর্কই নেই। সন্ত্রাসবাদী এবং দেশবিরোধী শক্তি আন্দোলন হাইজ্যাক করেছে। বিলাসবহুল গাড়ি এবং কেতাদুরস্ত জামাকাপড় পড়ে রাজধানীর বুকে যারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তারা কখনও কৃষক হতে পারে না।’’ কিন্তু কৃষক আন্দোলনে খালিস্তান যোগ টেনে আনায় বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, কৃষকদের সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট না হয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁদের সন্ত্রাসবাদী বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে।