গাঁধী পরিবারকে কংগ্রেস থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টায় আক্রমণ অমিত শাহ, জে পি নাড্ডার।
বিরোধী শিবিরের মধ্যে কংগ্রেসকে একঘরে করার চেষ্টার পরে এ বার বিজেপি কংগ্রেসের মধ্যেই গাঁধী পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা শুরু করল।
এক দিকে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা অভিযোগ তুললেন, রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশন চিনের সরকার ও চিনের কমিউনিস্ট পার্টির থেকে চাঁদা নিয়েছে। তারপর চিনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির পক্ষে সওয়াল করেছে। অন্য দিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অভিযোগ, কংগ্রেসের নেতারা দলের মধ্যে দমবন্ধ বোধ করছেন।
লাদাখে চিনের জমি দখল নিয়ে রাহুল গাঁধী লাগাতার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করছেন। দেশের সুরক্ষা, জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে সরকারকে কতখানি নিশানা করা উচিত, তা নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যে দ্বিধা ছিল। কিন্তু কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে গোটা দল রাহুলের মত মেনেই আক্রমণের কৌশল নিয়েছে। চিন লাদাখে জমি দখল করেছে কি না, নিয়মিত এই প্রশ্নের মুখে বুধবারই বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধী শিবিরের বাকি দল কংগ্রেসের পাশে নেই। রাহুল গাঁধী নিয়মিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করছেন। কারণ কংগ্রেস তাঁকে ফের সভাপতি পদে ফেরাতে চাইছে। কিন্তু বাকি বিরোধী দল অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে বিবাদের সময়ে সরকারের পাশে থাকার পক্ষে।
আজ এক ধাপ এগিয়ে অমিত শাহ সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট তুলে ধরে বলেন, ‘‘কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে প্রবীণ ও নবীন সদস্যরা কিছু বিষয় তুলে ধরলেও তাঁদের ধমকে থামানো হয়েছে। দলের এক মুখপাত্রকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুঃখের কথা হল, কংগ্রেসের নেতারা দলের মধ্যে দমবন্ধ বোধ করছেন।’’ পাল্টা কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা মোদী-শাহকে কটাক্ষ করেন, ‘‘এখন যাঁরা বিজেপি-তে ক্ষমতা দখল করেছেন, তাঁরা তো প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীদের অবসর নিতে বাধ্য করিয়েছেন।’’
কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেলতে বিজেপির জনসম্পর্ক অভিযানের মঞ্চ থেকে নড্ডা অভিযোগ তোলেন, কংগ্রেসের ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশন ২০০৫-০৬-তে চিনের থেকে মোটা চাঁদা পেয়েছিল। এর চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী। এই ৩ লক্ষ মার্কিন ডলার চাঁদা কেন এসেছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নড্ডা। কংগ্রেসের যুক্তি, এ সবই আসল বিষয় থেকে নজর ঘোরানোর কৌশল। মোদী সরকার লাদাখ নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিতে পারছেন না বলেই এ সব প্রশ্ন তুলছে। ফাউন্ডেশন যে চাঁদা পেয়েছিল, তা তো সংস্থার রিপোর্টেই রয়েছে।
এর আগে বিজেপি অভিযোগ তুলেছিলেন, রাহুল-সনিয়া বেজিংয়ে গিয়ে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে চুক্তি সই করেছিলেন। কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, সেটা দু’দলের তরুণ নেতাদের একে অন্যের দেশে গিয়ে পারস্পরিক আদানপ্রদানের চু্ক্তি ছিল। অমিত শাহ, রাম মাধব, ভূপেন্দ্র যাদবরাও চিনের কমিউনিস্ট নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বিজেপির প্রতিনিধিরাও বেজিংয়ে গিয়ে কমিউনিস্ট পার্টির স্কুলে যোগ দিয়েছেন। সর্বোপরি মোদী নিজে চিনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১৮ বার বৈঠক করেছেন।