উদ্ধব ঠাকরে। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে উদ্ধব ঠাকরে যে প্রধান কাঁটা তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই বিরোধী শিবিরের মনোবল ভাঙতে আজ শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধান উদ্ধবকে আক্রমণ করলেন বিজেপির নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। উদ্ধবকে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘জানতে চাই, উদ্ধব কি তাঁর পিতা বালাসাহেবের সম্মানে কোনও কংগ্রেস নেতাকে দিয়ে কিছু ভাল কথা বলাতে পারবেন?’’
লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রে ‘ইন্ডিয়া’ এবং এনডিএ তুল্যমূল্য ভোট পেলেও, আসন জয়ের নিরিখে গেরুয়া শিবিরকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে বিরোধীরা। বিশেষ করে শিবসেনার দুই শিবিরের লড়াইয়ে উদ্ধব বাজিমাত করেন। শিবসেনা (ইউবিটি) ন’টি আসন জেতার পাশাপাশি, কংগ্রেসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রায় ১৭ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়ে ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে দ্বিতীয় দলে পরিণত হয়। তুলনায় শিবসেনা ভেঙে বেরিয়ে যাওয়া একনাথ শিন্দেরা পান ১৩ শতাংশ ভোট। আসন জেতে সাতটিতে। ফলে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে বিশেষ করে শিবসেনা সমর্থকদের বড় অংশের সমর্থন যে উদ্ধবের সঙ্গে রয়েছে, তা অনেকাংশে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়, সদ্য হয়ে যাওয়া লোকসভা নির্বাচনে।
তাই উদ্ধবকে কোণঠাসা করতে আজ বালাসাহেব ঠাকরের প্রতি কংগ্রেস নেতৃত্বের অতীত মনোভাবকে উস্কে দিতে চেয়েছেন শাহ। আজ উদ্ধবকে লক্ষ্য করে শাহের প্রশ্ন, ‘‘কোনও কংগ্রেস নেতা কী বালাসাহেব ঠাকরের সম্মানে কিছু বক্তব্য রাখতে পারবেন?’’ রাজনীতিকদের মতে, ওই কথা বলে একদিকে যেমন উদ্ধবকে দুই শিবিরের অতীতের বিরোধপূর্ণ অবস্থানকে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন শাহ, তেমনি শিবসেনার একনিষ্ঠ সমর্থকদের বালাসাহেব-বিরোধী কংগ্রেস নেতৃত্বকে ভোট না দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন।
আগামী ২০ নভেম্বর মহারাষ্ট্রে এক দফায় বিধানসভা নির্বাচন। প্রচার চলছে জোরকদমে। জাতীয়তাবাদ উস্কে দিতে এবং শরিকি বিভাজনের চেষ্টায় আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাতিয়ার করেছেন বীর সাভারকর প্রসঙ্গকে। শিবসেনার কাছে বীর সাভারকর আদর্শ হলেও, কংগ্রেসের একটি বড় অংশ মনে করে মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী হত্যার ‘ষড়যন্ত্রে হাত’ ছিল সাভারকরের। অমিত বলেন, ‘‘আমি আশা করব উদ্ধব ঠাকরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কাছে বীর সাভারকর সম্পর্কে দু-তিনটি ভাল কথা বলার জন্য অনুরোধ করতে।’’
উদ্ধবের পাশাপাশি কংগ্রেস সংরক্ষণ ব্যবস্থা তুলে দিতে তৎপর বলেও আজ সরব হন শাহ। তাঁর অভিযোগ, জাতগণনার নামে তফসিলি জাতি, জনজাতি ও ওবিসি সমাজের সংরক্ষণ তুলে দিতে চাইছে কংগ্রেস। তাঁর দাবি, উলেমা কাউন্সিল তাঁদের সমর্থনের পরিবর্তেমুসলিমদের জন্য শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে। যা মেনে নিয়েছে মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোলে।’’ যদিও শাহের ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন নানা পাটোলে। তাঁর কথায়, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি।’’