জোড়াতালি দিয়েও আর লোকসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে পারল না বিজেপি। পাঁচ বছর আগে ২৮২ জন সাংসদ নিয়ে বিজেপি যে ভাবে নরেন্দ্র মোদীর ৫৬ ইঞ্চির ছাতির জোর দেখাত, মেয়াদ ফুরোনোর সময় এখন সেটি নেমে এল ২৬৯-তে। যা কি না সংখ্যাগরিষ্ঠতার থেকে তিনটি কম।
গতকাল লোকসভায় ছিল তিন তালাক বিল নিয়ে বিতর্ক। সেই আলোচনায় থাকার জন্য দলের সাংসদদের উদ্দেশে হুইপ জারি করেছিল বিজেপি। হুইপ জারি হলে সংসদীয় দল থেকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কৃত সাংসদদেরও হাজির থাকতে হয়। কিন্তু তালাক বিলে ভোটাভুটির সময়ে হিসেব কষে দেখা যায়, বিজেপির ত্রিশ জনের মতো সাংসদ গরহাজির। এনডিএর অন্য শরিকদের নিয়ে সব মিলিয়ে আড়াইশোর মতো সাংসদের সমর্থন পায় শাসক শিবির। ফলে জোড়া অস্বস্তির মুখে পড়ে বিজেপি। কারণ, গতকালই বিজেপির দুই সাংসদ ইস্তফা দিয়েছেন লোকসভা থেকে। কারণ, তাঁরা রাজ্যে বিধায়ক হয়েছেন। তার পরে লোকসভায় বিজেপির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬৯। এর মধ্যে স্পিকার সুমিত্রা মহাজনও রয়েছেন। আছেন জর্জ বেকার-সহ দু’জন মনোনীত সাংসদও। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭২-এর থেকে এই সংখ্যা কম। একের পর রাজ্যে উপনির্বাচনে হারের পর বিজেপির সংখ্যা কমতে শুরুই করেছিল। কিন্তু স্পিকার, মনোনীতদের দিয়ে বিজেপি দেখানোর চেষ্টা করছিল, নিজেদের জোরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। কিন্তু বিরোধীরাই এখন বলতে শুরু করেছে, গত লোকসভায় ২৮২ টি আসন নিয়ে এসেছিল বিজেপি। এনডিএর শরিক নিয়ে ৩১২। এখন বিজেপির সাংসদ কমে যেমন তারা সংখ্যালঘু, তেমনই শরিকরাও সঙ্গ ছাড়ছে। ফলে পরের ভোটে উড়ে যাবে বিজেপি।
কিন্তু এর থেকেও বড় অস্বস্তি, হুইপ সত্ত্বেও বড় মাত্রায় সাংসদদের অনুপস্থিতি। লোকসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক অনুরাগ ঠাকুর
বলেন, ‘‘কেন এত জন সাংসদ অনুপস্থিত থাকলেন, তার কারণ খোঁজা হচ্ছে। কয়েক জন অবশ্য নানা কারণে থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু যাঁরা না জানিয়ে আসেননি, তাঁদের কাছে কারণ জানতে চাওয়া হবে।’’