প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
‘বিজেপিকে জানুন’।
চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে সাফল্যের পরে এ বার আন্তর্জাতিক মঞ্চে দলকে ‘চেনাতে’ ও তার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে তৎপর হলেন নরেন্দ্র মোদী-জে পি নড্ডারা। আগামিকাল দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে ১৩টি দেশের ভারতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বিজেপি সভাপতি নড্ডা। তাঁরা চান, দেশের শাসক দলের সঙ্গে আরও ভাল ভাবে পরিচিত হোক আমন্ত্রিত দেশগুলি।
কাল বিকেল চারটেয় বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আলাপচারিতায় উপস্থিত থাকবেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। দফতর ঘুরিয়ে দেখানোর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠার সময় থেকে বর্তমান পর্যন্ত দলের যাত্রা, নীতি, সংস্কৃতি, আদর্শ, সবই বিদেশি প্রতিনিধিদের কাছে তুলে ধরবেন বিজেপি নেতারা। আমন্ত্রিতদের তালিকায় যেমন প্রতিবেশী বাংলাদেশ রয়েছে, তেমনই রয়েছে ফ্রান্স, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরির মতো দেশগুলি। উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনামের মতো রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরাও।
প্রতিষ্ঠা দিবসে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কাছে দলকে তুলে ধরার এমন উদ্যোগ এই প্রথম বিজেপিতে। বর্তমান সময়ে ভূ-কৌশলগত অস্থিরতার আবহে ভারত এক শক্তিশালী মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় উঠে আসার চেষ্টা করছে। তাই আগামিকাল বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বিজেপি নেতাদের বৈঠক যথেষ্ট তাৎপূর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এতে এক দিকে শাসক শিবির যেমন বেসরকারি ভাবে নিজের অবস্থান অন্যান্য দেশের কাছে তুলে ধরার সুযোগ পাবে, তেমনিই আমন্ত্রিত বিদেশি প্রতিনিধিদের সামনেও শাসক শিবিরকে বুঝে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘বিদেশনীতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িয়ে রয়েছে বাণিজ্য। তাই বাণিজ্যিক স্বার্থের ক্ষেত্রেও এই ধরনের বৈঠকগুলি কার্যকর ভূমিকা নিয়ে থাকে।’’ নরেন্দ্র মোদী সরকারের গত সাত বছরের শাসনকালের বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘু সমাজের বিরুদ্ধে ঘৃণা-ভাষণ, কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গোরক্ষক বাহিনীর তাণ্ডবে একাধিক সংখ্যালঘুর মৃত্যুর ঘটনায় আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কালকের বৈঠকে সেই ভাবমূর্তি উদ্ধারের সুযোগ পেতে চলেছেন নড্ডারা।
আগামিকাল থেকে পরবর্তী টানা দু’সপ্তাহ ধরে দেশে জনজাগরণ কর্মসূচিও চালাবে বিজেপি। আগামী দু’সপ্তাহে মোদী সরকারের বিভিন্ন জনমুখী নীতির সুফল নিয়ে একেবারে তৃণমূল স্তরে প্রচার করবে তারা। আজ সংসদীয় দলের বৈঠকেও এ বিষয়ে তৎপর হতে দলীয়
সাংসদদের নির্দেশ দিয়েছেন মোদী। বিশেষ করে, প্রধানমন্ত্রী অন্ন যোজনা, পেনশন যোজনার সুফল কী ভাবে কোভিডের সময়ে দেশের মানুষকে অন্ন জুগিয়েছে, তা যেমন প্রচার করা হবে, তেমনই যে সব প্রান্তিক মানুষ এখনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলেননি, কৃষি বিমা বা অবসর ভাতার সুযোগ পাননি, তাঁদের তা পাইয়ে দিতে দলীয় কর্মীদের গ্রামে-গ্রামে ঘুরতে বলেছে দল। প্রত্যেক সাংসদ ও বিধায়ককে ওই সময়ে অন্তত চব্বিশ ঘণ্টা গ্রামে কাটাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, যে সব প্রাপ্তবয়স্ক ও ১২-১৮ বছরের ছোটদের এখনও টিকাকরণ হয়নি, তাঁদের টিকাকরণ নিশ্চিত করতে দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন নড্ডারা। পুকুর-খাল-নদী সাফাইয়ের লক্ষ্যে বিজেপি কর্মীরা একটি দিন স্বচ্ছতা অভিযানেও
অংশ নেবেন।