বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।— ফাইল চিত্র।
শবরীমালা নিয়ে তাঁর মন্তব্যে বিতর্কের রেশ এখনও কাটেনি। এর মধ্যেই রাজনীতির হাওয়াকে আরও গরম করে দিতে আয়াপ্পা মন্দিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।
শবরীমালায় ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশ নিয়ে সব বাধা কাটিয়ে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। কেরলের বাম গণতান্ত্রিক জোট সরকার সেই রায় কার্যকর করতে যাবতীয় চেষ্টা চালালেও ভক্তদের ‘আস্থা’-য় হাওয়া দিয়ে চলেছে বিজেপি। পিনারাই বিজয়নের সরকার সাড়ে তিন হাজার ভক্তকে গ্রেফতার করায় দু’দিন আগে কেরল সরকার ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন অমিত। তবে এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হতেই রবিবার কেরল বিজেপির সভাপতি শ্রীধরণ পিল্লাই বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমই অমিতের কথা বিকৃত করেছে। তিনি বলেছিলেন, বিক্ষোভ আটকাতে দমনের রাস্তা নিলে ভক্তরাই কেরল সরকারকে উল্টে দেবে।’’ বিজেপির এক শীর্ষস্থানীয় নেতা জানান, নভেম্বরের ১৭ তারিখ থেকে শবরীমালা মন্দির খুললে বিজেপি সভাপতি সেখানে যেতে চাইছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
‘কেরলে জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে’ এবং ‘রাজ্য সরকার আগুন নিয়ে খেলছে’ বলে হুমকি দিয়েছিলেন অমিত। পাল্টা জবাবও দেন বিজয়নও। বলেন, ‘‘অমিত শাহের বক্তব্য আইনের শাসনের প্রতি হুমকি।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালাকৃষ্ণণ অমিতকে মনে করিয়ে দেন, ১৯৫৯ আর ২০১৮ এক নয়। তখন কেরলে ই এম এস নাম্বুদ্রিপাদ সরকারকে বরখাস্ত করেছিল জওহরলাল নেহরু সরকার। এখন পরিস্থিতি আলাদা।
এই টানাপড়েনের মধ্যেই কেরল সরকার আজ হাইকোর্টে জানিয়েছে, প্রকৃত ভক্তরা যাতে আয়াপ্পা মন্দিরে যেতে পারেন, সরকার তার ব্যবস্থা করবে। শবরীমালা মন্দিরে তাঁদের প্রবেশ করানোর ব্যবস্থা করে দিতে রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন চার মহিলা ভক্ত। সরকার এ দিন আশ্বস্ত করার পরে ওই আর্জি নিয়ে আর এগোতে চায়নি আদালত। তবে হাইকোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের আশা, পরের মাসে মন্দির খুললে সংঘাতের কোনও পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা।
লোকসভা ভোটের আগে রামমন্দির আন্দোলনকে প্রাসঙ্গিক করে তোলার জন্য এখন মরিয়া বিজেপি নেতারা। তাই সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা মামলা চলার সময়েই ভক্তদের আস্থার প্রশ্নকে টেনে চাপ বাড়িয়ে চলেছে কেন্দ্রের শাসক দল। আর এর সঙ্গেই শবরীমালা নিয়ে আদালতের রায়ের বিরোধিতাকে উস্কে দেওয়া হচ্ছে। ধর্মীয় ব্যাপারে আইনের কচকচি নয়, আস্থাই বড়— সেটাই বোঝাতে চান তাঁরা।