—প্রতীকী চিত্র।
তিহাড় জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর থেকেই অরবিন্দ কেজরীওয়াল বিজেপি ও আরএসএসের মধ্যে ফাটল তৈরির কৌশল নিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদীর কাজকর্ম নিয়ে আরএসএসের সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতকে প্রশ্ন ছুড়েছিলেন। এ বার সেই বিজেপি ও আরএসএস দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল ঠিক করতে বৈঠকে বসল।
আজ থেকে রাজস্থানে রণথম্বোরে বিজেপি ও আরএসএসের দু’দিনের সমন্বয় বৈঠক শুরু হয়েছে। দিল্লির বিধানসভা ভোটে বিজেপির রণকৌশলের পাশাপাশি অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বিরুদ্ধে বিজেপি কাকে মুখ করে ভোটে যাবে, তা নিয়ে রণথম্বোরের বৈঠকে আলোচনা হবে। বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের পাশাপাশি আরএসএস নেতৃত্বও মনে করছে, অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বিপরীতে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে কাউকে সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন।
এই ‘চিন্তন বৈঠক’-এ যোগ দিতে দিল্লির বিজেপি সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব, দিল্লির ভারপ্রাপ্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা-সহ বিজেপির দিল্লির সাংসদ, বিধায়ক, প্রাক্তন বিধায়ক ও বিজেপির বিভিন্ন মোর্চা, আইটি সেল মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন নেতা রাজস্থানে পৌঁছেছেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এল সন্তোষও বৈঠকে থাকবেন। তিনিই বিজেপির সঙ্গে আরএসএসের সমন্বয়ের কাজ করবেন। বিজেপি সূত্রের খবর, দিল্লিতে সংবাদমাধ্যমের নজর থেকে আড়ালে বৈঠক করতেই রণথম্বোরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। রাজস্থানে এখন বিজেপিরই সরকার রয়েছে। ফলে চিন্তন বৈঠকের আয়োজনে কোনও সমস্যা নেই। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, দিল্লিতে দলের মধ্যে যথেষ্ট গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। দিল্লি থেকে দূরে গিয়ে দু’দিন একসঙ্গে থাকলে সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অনেকটাই কমবে।
অরবিন্দ কেজরীওয়াল জেল থেকে বেরোনোর পরে সরাসরি মোহন ভাগবতকে চিঠি লিখে প্রশ্ন করেছেন, আগামী বছর ৭৫ বছর পূর্ণ হলে নরেন্দ্র মোদী বিজেপির নিয়ম মেনে অবসর নেবেন কি না? বিজেপি ও আরএসএসের মধ্যে চাপা দ্বন্দ্ব উস্কে দিতে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, আরএসএস কি এখন বিজেপির জন্য শুধুই কার্পেট পাতার কাজ করছে? আগামী বছরের গোড়াতেই দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে মানুষের সহানুভূতি কুড়োতে কেজরীওয়াল জেল থেকে বেরিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। বিজেপি গত মার্চে আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরীওয়ালের গ্রেফতারির পর থেকে এই দাবি করে এলেও তিনি যে ভোটের তিন-চার মাস আগে এই কৌশল নেবেন, তা বিজেপি
আশা করেনি।
দিল্লিতে গত বিধানসভা নির্বাচনে ২০২০ সালে বিজেপি দিল্লি বিধানসভার ৭০টি আসনের মধ্যে মাত্র ৮টি আসনে জিতেছিল। গত ২৬ বছর ধরে প্রথমে কংগ্রেস, তার পরে আম আদমি পার্টি দিল্লির ক্ষমতায় রয়েছে। কেন্দ্রে টানা তিন বার মোদী সরকার জিতে এলেও খাস রাজধানীতে বিজেপির বারবার হার দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। লোকসভা নির্বাচনে সামগ্রিক ভাবে এ বার আগের তুলনায় আরএসএস নিষ্ক্রিয় ছিল। সূত্রের খবর, এখন হরিয়ানাতেও গ্রামীণ এলাকায় জনসমর্থন পেতে বিজেপি আরএসএসের
সাহায্য চেয়েছে।