Bihar Election Result 2020

কাঁটার আসন! সংশয়ে নীতীশ

তেজস্বীর দাবি,  একাধিক আসনে পোস্টাল ব্যালট পরে গোনা হয়েছে। যা নিয়মবিরুদ্ধ। একটি আসনে ৯০০ পোস্টাল ভোট বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২৪
Share:

নীতীশ কুমার। ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গতকাল স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে নীতীশ কুমারই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন। তা সত্ত্বেও আজ দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রিত্ব প্রশ্নে ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখলেন নীতীশ নিজে। আজ তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এনডিএ-র বৈঠকে নেওয়া হবে। জেডিইউ সূত্রের খবর, নীতীশ নিজে মুখ্যমন্ত্রী হতে ব্যক্তিগত ভাবে ইচ্ছুক হলেও, ছোট শরিক হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসা আদৌ ঠিক হবে কি না, তা ভাবাচ্ছে নীতীশকে।

Advertisement

অন্য দিকে, ‘মহাগঠবন্ধনের’ নেতা নির্বাচিত হয়ে আরজেডির তেজস্বী যাদব নীতীশকে ‘অন্তরাত্মার ডাকে সাড়া দিয়ে’ মুখ্যমন্ত্রিত্ব প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে আজ কারচুপি করে বিরোধী মহাজোটকে ভোটে হারানো হয়েছে বলে সরব হন তিনি।

জেতার পর আজ প্রথম বার দলীয় দফতরে জেডিইউয়ের জয়ী ও পরাজিত ১১৫ জন বিধায়কের সঙ্গে বৈঠকে বসেন নীতীশ। বৈঠকে দলের সমস্ত নেতা-কর্মীকে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানান তিনি। পরে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, সেই প্রশ্নের উত্তরে নীতীশ কুমার বলেন, ‘‘জেডিইউয়ের তরফে কোনও দাবি করা হয়নি। এ বিষয়ে এনডিএ-র বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

Advertisement

আরও পডুন: পাঠ্যসূচি থেকে বাদ অরুন্ধতী ​

সূত্রের মতে, দীপাবলির পরে আগামী সোমবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন নীতীশ। জেডিইউ সূত্রের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর গদি ছাড়তে তেমন আগ্রহীও নন তিনি। কিন্তু মূলত দু’টি বিষয়ে তিনি সংশয়ে রয়েছেন। প্রথমত, জনতার ভোট থেকেই স্পষ্ট বিহারবাসীর বড় অংশ তাঁর উপরে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। রাজ্যে তৃতীয় স্থানে নেমে এসেছে দল। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসা নীতির প্রশ্নে কতটা ঠিক, তা নিয়ে সংশয়ে নীতীশ। আর তিনি নিজের ভাবমূর্তি সম্পর্কেও সচেতন। ভোটের ফলই বলে দিচ্ছে, সেই ভাবমূর্তি নেই। তার উপরে মুখ্যমন্ত্রী হলে তাতে আরও কালির ছিটে লাগবে কি না, তা-ও ভাবাচ্ছে নীতীশকে।

দ্বিতীয়ত, এনডিএ জোটের ছোট শরিক হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী হলে আগামী দিনে মন্ত্রিসভা গঠন থেকে শুরু করে সরকারের দৈনন্দিন কাজে বিজেপি যে হস্তক্ষেপ করবে তা বুঝতে পারছেন নীতীশ। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে দুই শরিকের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে যখন গোড়া থেকেই নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী করার বিষয়ে

আপত্তি জানাতে শুরু করেছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা।অন্য দিকে, মহাজোটের নেতা হিসাবে আজ তেজস্বী যাদবকেই বেছে নেয় বিরোধী দলগুলি। আর ফল প্রকাশের পর প্রথম সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তেজস্বী অভিযোগ করেন, প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে ফল বদলে দেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, “এনডিএ মহাজোট থেকে ১৫টি আসন বেশি পেয়েছে। কিন্তু দু’দলের ভোটের ব্যবধান মাত্র ১২,৭৬৮ ভোট। এনডিএ পেয়েছে ৩৭.২৬ শতাংশ ভোট, সেখানে মহাজোট পেয়েছে ৩৭.২৩ শতাংশ ভোট। এত কম ব্যবধান কী করে হয়?’’

তেজস্বীর দাবি, একাধিক আসনে পোস্টাল ব্যালট পরে গোনা হয়েছে। যা নিয়মবিরুদ্ধ। একটি আসনে ৯০০ পোস্টাল ভোট বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বিতর্কিত আসনগুলিতে পোস্টাল ব্যালট পুনর্গণনার দাবি তুলেছেন তিনি।

কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম আজ স্বীকার করে নিয়েছেন, বিহারে দলের ফল সামান্য ভাল হলেই সার্বিক ফলাফল কার্যত পাল্টে যেতে পারত। তাঁর কথায়, “দশটি আসনের ফল অন্য হলেই সরকার পাল্টে যেত। বিহার সরকার পরিবর্তনের একেবারে দোরগোড়ায় এসে গিয়েছিল। কারণ, গত পনেরো বছর নীতীশ কুমারের শাসনেও বিহার দেশের সবচেয়ে দরিদ্রতম রাজ্যই রয়ে গিয়েছে। সে কারণে মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র ০.৩ শতাংশ ভোট পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।’’ চিদম্বরমের স্বীকারোক্তি, বিহারে দলের ফলাফলে তাঁরা হতাশ। খুব শীঘ্রই ওয়ার্কিং কমিটি বিহারের ফল বিশ্লেষণে বসবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement