প্রকাশ জাভড়েকর।
বক্তৃতা দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী। বলছেন, ‘‘মানুষের হৃদয়ে যখন সব জমতে থাকে, যখন কাউকে সে কিছু বলতে পারে না— সেটাই সব চেয়ে বড় শাস্তি। আপনি যখন কারও সঙ্গে কথা বলতে বা যোগাযোগ করতে পারছেন না, যোগাযোগের কোনও যন্ত্রই নেই আপনার কাছে— সেটাই সব চেয়ে বড় শাস্তি।’’ একই বক্তৃতায় সেই মন্ত্রীই বলছেন, ‘‘৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। জম্মু-কাশ্মীর এত দিন যে উন্নয়ন পায়নি, তা এ বার পাবে।’’
আর রাতে বিরোধী শিবির বলল, এই বক্তৃতা দেওয়ার সময়ে মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের কাছে কেউ কি জানতে চেয়েছিলেন যে, কাশ্মীরবাসীর ‘সব চেয়ে বড় শাস্তি’ সম্পর্কে তাঁর কী মত? সেখানেও তো গত ৫ অগস্ট মধ্যরাতের আগে থেকে শুরু করে এখনও মোবাইল সংযোগ নেই, ইন্টারনেট নেই। ল্যান্ডলাইন সংযোগ আসছে-যাচ্ছে। তার নেপথ্যেও নাকি রয়েছে প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ। বাইরে থাকা আপনজনেদের খবরটুকু পেতে কালঘাম বেরোচ্ছে সাধারণ উপত্যকাবাসীর।
জাভড়েকরকে যে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়নি, তার উত্তর অবশ্য দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ হওয়ার পরে তাঁর প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে এ দিন রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘ইন্টারনেট কাজের জিনিস। কিন্তু জঙ্গি আর পাকিস্তানিদের কাছে সেটা আরও বেশি কাজের। ইন্টারনেট ব্যবহার করে যেমন লোক জড়ো করা হয়, তেমন অন্ধবিশ্বাসও ছড়ানো হয়। এটা সব চেয়ে বিপজ্জনক অস্ত্র। এই মাধ্যমটাকে ব্যবহার করে ডাহা মিথ্যে কথা ছড়ানো হচ্ছে। সেই কারণেই (ইন্টারনেট) বন্ধ করা হয়েছে। ফেরানো হবে ধাপে ধাপে।’’ রাজ্যপালের দাবি, ৯৬টি টেলিফোন এক্সচেঞ্জের মধ্যে ৪৬টি সক্রিয় হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে মোবাইল পরিষেবাও চালু হবে।
দিল্লিতে জাভড়েকর আজ গিয়েছিলেন কমিউনিটি রেডিও-র জাতীয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে। সেখানেই মোদী সরকারের প্রথম ৭৫ দিনের কাজ নিয়ে ‘জন কানেক্ট’ শীর্ষক একটি বুকলেটও প্রকাশ করেন তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী। ৩৭০ রদ নিয়ে সরকারকে প্রশংসায় ভরিয়ে বলেন, ‘‘(কাশ্মীরের) লোকেরা সংরক্ষণ পাননি, এ বার তা পাবেন। শিক্ষা, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। সমস্ত আইন এখন প্রযোজ্য হবে কাশ্মীরে। কাজেই বাকি দেশের থেকে বেশি হারেই কাশ্মীরের প্রগতি হবে।’’