নরেন্দ্র মোদী।—ছবি রয়টার্স।
উপত্যকায় পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। প্রয়োজন মানুষের আস্থা অর্জনের। সে কারণে অক্টোবরের বিনিয়োগকারীদের সম্মেলনও পিছিয়ে নভেম্বরে করার কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু তলে তলে জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নের নকশাও তৈরি করে ফেলছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
কালই মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নের কাজে নেমে পড়ার নির্দেশ দেন। সরকারি সূত্রের মতে, কেন্দ্রীয় সরকারের অন্তত এক ডজন মন্ত্রক জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নের রোডম্যাপ তৈরির কাজ করছে। গত কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিক বৈঠকও হয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রকের। রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সঙ্গেও পরামর্শ হয়েছে। এক কর্তার মতে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে উন্নয়নের কাজও জোরকদমে শুরু হয়ে যাবে। এখন মূল লক্ষ্য, মানুষের আস্থা অর্জন করা। বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে মানুষকে বোঝানো। সেই কাজটিও চলছে লাগাতার।
কী ভাবে এগোচ্ছে মোদী সরকার?
সূত্রের মতে, অতীতেও জম্মু-কাশ্মীরে প্রচুর টাকা কেন্দ্র থেকে পাঠানো হত। কিন্তু নীচু স্তর পর্যন্ত সেটি পৌঁছত না। এখন সরকারের মূল লক্ষ্যই হল, মানুষের উন্নয়নের অর্থ সরাসরি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। যাতে রোজগার বাড়ে। দক্ষতা উন্নয়ন মন্ত্রক ইতিমধ্যেই সাতটি জেলাকে চিহ্নিত করেছে, যেখানে অনেক বেশি কাজ করতে হবে। শিল্প ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যুবকদের, নতুন প্রযুক্তি পৌঁছে দেওয়া হবে, শিক্ষার মানও বাড়াতে হবে। মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের একটি প্রতিনিধি দলও শীঘ্র জম্মু-কাশ্মীরে যাবে। শিক্ষা নীতিরও আমূল বদল করা হবে। যাতে শুধু শ্রীনগর নয়, প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়াদেরও মূলস্রোতে সামিল করা যায়।
ছোট ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রকও একটি সবিস্তার রোডম্যাপ তৈরি করছে। সেই মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘পণ্যের ক্ষেত্রে জম্মু-কাশ্মীরের নিজস্বতা রয়েছে। সে সব পণ্যের বাজারকে কী ভাবে দেশ ও বিদেশে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, সেটিই সরকারের লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী এই মর্মে আগেই নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে রাজ্যের রাজস্বও বাড়বে।’’
সংখ্যালঘু মন্ত্রকও তাদের অধীনে উন্নয়ন প্রকল্পের জাল বিস্তার করতে প্রস্তুত। এর পাশাপাশি জোর দেওয়া হবে পর্যটন শিল্পেও। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জম্মু-কাশ্মীরে কম পরিচিত পর্যটনস্থলকেও ঢেলে সাজানো হবে। রেল মন্ত্রক ইতিমধ্যেই বারামুলা থেকে জম্মু পর্যন্ত রেল লাইন পাতার কাজ হাতে নিয়েছে।
রেলের আরও সম্প্রসারণও করা
হবে। যা পর্যটনের বিস্তারে আরও সাহায্য করবে।
আপাতত মানুষের আস্থা অর্জনের জন্য গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রককে কাজে লাগানো হচ্ছে। গত কয়েক বছরে রাজ্যে মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠী চালু হয়েছে। তাদের সাহায্যে মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে সরকারি সূত্রের দাবি। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকও দূরদর্শনে কাশ্মীরের পরিস্থিতির উপর বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। ‘কাশ্মীর কা সচ’ নামে একটি অনুষ্ঠান হচ্ছে, যাতে ‘অপপ্রচার’-এর হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।