ছবি: রয়টার্স।
‘‘জঙ্গি বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার পর বিক্ষোভে উত্তাল কাশ্মীরে প্রাণ হারিয়েছিলেন শতাধিক। কিন্তু তখনও সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেওয়া হয়নি।’’ কিছুটা উত্তেজিতভাবেই বলছিলেন সানা ইরশাদ মাট্টু।
মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক হিসেবে শ্রীনগরে বেরিয়েছিলেন পরিস্থিতি দেখতে। সানার কথায়, ‘‘পাঁচ মিনিটের পথ যেতে লেগেছে আধ ঘণ্টা। পথে শুধু ব্যারিকেড। বারবার আটকানো হয়েছে। ছবি তুলতে দেওয়া হয়নি। নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যেরা বললেন, ফিরে যান। আমরা সাংবাদিকেরাই অসহায়। জানি না, কে মারা গেলেন, কে আহত হলেন। সাধারণ মানুষ তো কোনও খবরাখবরই পাচ্ছেন না।’’
গত রবিবার মধ্যরাত থেকেই টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাশ্মীরে। কার্ফু এবং ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
পরিস্থিতি এমনই যে শ্রীনগরে বেশিরভাগ ইংরেজি এবং উর্দু সংবাদপত্র বন্ধ। কার্যত কেউ খবরই পাঠাতে পারছেন না। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় খবরের ওয়েবসাইট ‘আপডেট’ করা যায়নি গত পরশু থেকে।
সাংবাদিক মতিন (নাম পরিবর্তিত) গিয়েছিলেন লাল চকে। নিরাপত্তাবাহিনী তাঁকে ক্যামেরা বন্ধ করতে বলে। তিনি যখন সাংবাদিক পরিচয় দেন, তখন তাঁকে সাফ বলা হয়, ‘‘এখানে কিছু নেই। যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। সটান ফিরে যান।’’
শ্রীনগর ছেড়ে যাঁরা দেশের অন্যত্র যাচ্ছেন, তাঁদের কাছে কোনও কোনও সাংবাদিক বা চিত্রসাংবাদিক কোনও মতে পেন ড্রাইভ দিয়ে দিচ্ছেন। তাতেই রয়েছে লিখিত বা ভিডিয়ো রিপোর্ট। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তা দেশের অন্যত্র পৌঁছে প্রকাশ করছেন বা সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক শ্রীনগর ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে তবে রিপোর্ট লিখছেন।
সাংবাদিক মুজাম্মিল জামিল যেমন শ্রীনগর ছেড়ে দিল্লি ফিরে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, সংবাদপত্রে রিপোর্টও লিখেছেন। এ ছাড়া, সংবাদপত্র বিক্রেতাদের কার্ফু পাস দেওয়া হয়নি। ফলে সংবাদপত্র প্রকাশ হলেও বিক্রির প্রশ্নই নেই।
সাংবাদিক জামিল যেমন লিখেছেন, ‘‘কাশ্মীরেই অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে কাশ্মীর।’’