কার্ফু শিথিল হবে কাশ্মীরে, লড়াই কোর্টে

সোমবার ইদ। কার্ফুর কবলে থাকা কাশ্মীর যাতে ইদ উদ্‌যাপন করতে পারে সে জন্য ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। ইদের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আজ ফের বৈঠকে বসেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ০২:৫৭
Share:

শ্রীনগরে সেনার টহলদারি। ছবি: এএফপি।

চলতি মাসের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছে কেন্দ্র। আজ সপ্তাহের শেষ কাজের দিনে স্বাভাবিক ছিল জম্মুর অধিকাংশ এলাকা। খুলেছে স্কুল-কলেজ। অন্য দিকে বিক্ষিপ্ত অশান্তি বাদ দিলে মোটের উপরে শান্ত ছিল কাশ্মীর। অন্য দিকে আজ কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন রাহুল গাঁধী। সুপ্রিম কোর্টেও দায়ের হয়েছে আরও মামলা।

Advertisement

সোমবার ইদ। কার্ফুর কবলে থাকা কাশ্মীর যাতে ইদ উদ্‌যাপন করতে পারে সে জন্য ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। ইদের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আজ ফের বৈঠকে বসেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। সোমবার কার্ফু বেশ কিছুটা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

গত কয়েক দিনের মতো আজও পরিস্থিতি দেখতে কাশ্মীরের পথে নামেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। সংবাদমাধ্যমের ভিডিয়োয় আজ অনন্তনাগের রাস্তায় এক মেষপালকের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষণ রেড্ডি দাবি করেন, ‘‘আগামী দশ থেকে পনেরো দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’ প্রশাসন স্থির করেছে ১৫ অগস্ট উপত্যকার সব পঞ্চায়েতে জাতীয় পতাকা তোলা হবে।

Advertisement

গত কাল রাজ্যের কোনও কোনও প্রান্তে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর এসেছিল। সবচেয়ে বড় বিক্ষোভটি হয় শৌরা এলাকায়। প্রায় কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন এমন একটি ভিডিয়ো বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে দেখা যায়। পুলিশের গুলি চালানোর আওয়াজও পাওয়া যায়। যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, প্রথমে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত হওয়া ও পরে পাকিস্তানের সংবাদপত্রে শ্রীনগর-বারামুলাতে দশ হাজার মানুষের বিক্ষোভের যে খবরটি প্রকাশিত হয়েছে তা মনগড়া।

আজ কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি মনোনয়ন নিয়ে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের মধ্যেই কাশ্মীরে গোলমালের খবর আসে। রাহুল ওই বৈঠকে ছিলেন না। কিন্তু ওই খবর পেয়ে তাঁকে ডাকা হয়। পরে তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীরে সব যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে রেখেছে সরকার। সেখান থেকে গোলমালের খবর আসছে। আমার দাবি, সেখানকার নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করুক সরকার। গোপনীয়তার পর্দা তোলা হোক।’’

বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, পরিস্থিতি যদি এতই স্বাভাবিক, তবে কেন সংবাদমাধ্যমকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না? এডিটর্স গিল্ড অব ইন্ডিয়া বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘কোনও এলাকার কান ও চোখ স্থানীয় সাংবাদিকেরা। উপত্যকায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাঁরা সমস্যায়।’’ বিষয়টি আজ পৌঁছেছে সুপ্রিম কোর্টেও। উপত্যকায় ইন্টারনেট না-থাকায় অধিকাংশ কাগজ প্রকাশ করা বা ওয়েবসাইট ‘আপডেট’ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এ দিন ‘কাশ্মীর টাইমস’-এর কার্যনির্বাহী সম্পাদক অনুরাধা ভাসিন সুপ্রিম কোর্টে এক আর্জি পেশ করেন। জম্মু-কাশ্মীরের সাংবাদিকেরা যাতে সুষ্ঠু ভাবে কাজ করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি। এ দিনই বিশেষ মর্যাদা লোপের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে ন্যাশনাল কনফারেন্স। উপত্যকায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না-পারায় মামলা করেছেন সদ্য আইন পাশ করা আলিম সইদও। সমাজকর্মী তেহসিন পুনাওয়ালার মামলাটি মঙ্গলবার বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চে ওঠার কথা।

সরকারি সূত্রের দাবি, সব ঠিক থাকলে দ্রুত মোবাইল ও ল্যান্ডলাইন পরিষেবা চালু করা হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement