ফোনে শেষ কথা হয়েছিল রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ। প্রতীকী ছবি।
২৪ ঘণ্টারও বেশি হয়ে গেল, আম্মির সঙ্গে কথাই বলতে পারলাম না। জ়িন্দা হ্যায় কি মর গ্যয়ি, পতা নহি।
ফোনে শেষ কথা হয়েছিল রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ। বাড়ি কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকায়। খুব কাছে হুরিয়ত নেতা মিরওয়াইজ উমর ফারুকের বাড়ি। ফলে এলাকায় সেনা, আধা-সেনা থাকেই। আম্মি বলল, তা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। তার পরই ফোন কেটে যায়। মাঝরাতের পর জানলাম, ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে, ইন্টারনেট বন্ধ। সোমবার সকাল থেকে বারবার ফোন করেছি। পাইনি। হোয়াটস্অ্যাপেও না। খুড়তুতো ভাই জানাল, বিকেলের দিকে সামান্য সময় ব্রডব্যান্ড চালু হয়েছিল, সেই সুযোগে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পেরেছিল। স্ত্রী বলেছে, রাস্তায় পাথর ছোড়া শুরু হয়েছে। তার পর আর কথা হয়নি।
পুজোর আগে এ বারেও পশ্চিমবঙ্গে এসেছি পসরা নিয়ে। সঙ্গে স্ত্রী, সন্তান। পরিবারের বাকিরা শ্রীনগরেই। যখন এসেছিলাম, সব ঠিক ছিল। হঠাৎই অনেক আধা-সেনা পাঠানো হল। অমরনাথ যাত্রা বন্ধ। বলা হল, বড় ধরনের সন্ত্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আমরা কাশ্মীরিরা কার্ফুতে অভ্যস্ত। কমবেশি সবার বাড়িতে কিছু খাবার মজুত করা থাকে। কিন্তু টাকা তোলার উপায় নেই। এটিএম বন্ধ। এভাবে কত দিন? কবে আবার আম্মির সঙ্গে কথা বলতে পারব? শুধু আমি নই, কাশ্মীরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই পারেনি কেউ।
ভয় পাচ্ছি? আম্মি-ভাই-বোন বেঁচে আছে কি নেই, তা পর্যন্ত যখন জানতে পারছি না, ভয় পাওয়ারই কথা। তবে কাশ্মীরের মানুষ বোধ হয় ভয় পেতে পেতে ক্লান্ত।
(লেখক শালবিক্রেতা)