Bhagwant Mann

Bhagwant Maan: ‘রাজ করার জন্য নীতির নামই রাজনীতি’! পঞ্জাবে জেতার পর ভগবন্ত মানের পুরনো ভিডিয়ো ভাইরাল

কৌতুক অভিনেতা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী— মানের এই সফরের যোগসূত্র এবং মূল শক্তিই কিন্তু ‘মঞ্চ’। যার জোরে আজ তিনি তিন কোটি মানুষের প্রতিনিধি। তাঁদের সুখ-দুঃখ, ভাল থাকা, ভাল রাখা— সব কিছুই এখন তাঁর জিম্মায়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২২ ১০:৫৮
Share:

ভগবন্ত মান এবং নভজ্যোত সিংহ সিধু।

মঞ্চাভিনেতা। দু’বারের সাংসদ। এ বার মুখ্যমন্ত্রী! মঞ্চ পেলেই তিনি যে বাজিমাত করতে পারেন তা আবারও প্রমাণ করে ছাড়লেন। তা সে কৌতুকাভিনয়ের মঞ্চ হোক বা রাজনীতির মঞ্চ। ইতিমধ্যে তাঁকে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কির সঙ্গেও তুলনা করা শুরু হয়ে গিয়েছে। তিনি ‘পঞ্জাবের জেলেনস্কি’ ভগবত মান।

Advertisement

তিনি পঞ্জাবের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কাঁধে ভর করেই এ বারের বিধানসভা নির্বাচনের বৈতরিণী পার করেছে অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি (আপ)। বিজেপি, কংগ্রেস, অকালি-র মতো দুঁদে দলকে ধুয়েমুছে সাফ করে ১১৭টি আসনের মধ্যে ৯২টি আসন জিতে ক্ষমতায় আপ। শিখরাজ্যে ‘ঝাড়ু’ জয়ধ্বজ তুলে ধরার আসল কারিগর সেই মঞ্চাভিনেতা ভগবন্ত মান।

কৌতুক অভিনেতা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী— মানের এই সফরের যোগসূত্র এবং মূল শক্তিই কিন্তু ‘মঞ্চ’। যার জোরে আজ তিনি তিন কোটি মানুষের প্রতিনিধি। তাঁদের সুখ-দুঃখ, ভাল থাকা, ভাল রাখা— সব কিছুই এখন তাঁর জিম্মায়।

Advertisement

পঞ্জাবে বিপুল সমর্থন নিয়ে জিতে আসার পর থেকেই মানের পুরনো একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। তিনি যখন এক জন পোশাদার কৌতুক অভিনেতা হিসেবে মঞ্চ কাঁপাচ্ছেন, ঠিক সেই সময়েরই একটি ভিডিয়ো সেটি।

সাল ২০০৬। একটি জনপ্রিয় কৌতুক রিয়ালিটি শো-এ তখন অন্যতম প্রতিযোগী মান। মঞ্চে তিনি। আর বিচারকের আসনে ছিলেন তাঁর বর্তমান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী নভজ্যোত সিংহ সিধু। এক জন হাসাতেন, অন্য জন বিচারকের আসনে বসে হাসতেন। তাঁর কৌতুকের তুল্যমূল্য বিচার করতেন। কিন্তু সময় যে মানুষকে অনেক কিছু শিখিয়ে যায়, অনেক কিছু দিয়ে যায়, আবার তেমনই অনেক কিছু ছিনিয়েও নেয়, তার হাতগরমে উদাহরণ এক জন বিচারক, এক জন প্রতিযোগী, আবার রাজনীতির আঙিনায় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী— সিধু এবং মান। প্রথম জন ব্যর্থ। দ্বিতীয় জন সফল।

ছাত্র থাকাকালীন মানকে এক শিক্ষক জিজ্ঞাসা করেছিলেন ভবিষ্যতে সে কী হতে চায়। কৌতুকের সঙ্গে মান বলেছিলেন, “যদি আমি ভাল শিক্ষা পাই, তা হলে সরকারি আধিকারিক হতে পারি। যদি তা না পাই তা হলে বিধায়ক কিংবা মন্ত্রী হতে পারি!” ঘটনাচক্রে মান আজ এক জন রাজনীতিক। সাংসদ থেকে এখন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়ে দেওয়া তাঁর উত্তরের দ্বিতীয় অংশটিকেই জীবনের পাথেয় করেছেন শেষমেশ। মান যখন এক জন পুরোপুরি পেশাদার কৌতুকাভিনেতা, তখন রিয়ালিটি শো-এর ওই পর্বে মানের কৌতুকের বিষয় ছিল রাজনীতি। তাঁর কৌতুকের বেশির ভাগটাই ছিল রাজনীতিকে নিয়ে টিপ্পনী।

তেমনই একটি টিপ্পনী করেছিলেন ওই শো-এ। সেখানে মানকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “আমি এক রাজনীতিবিদকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, রাজনীতি মানে কী? তিনি আমাকে বলেছিলেন, কী ভাবে ‘রাজ’ করবেন তার নীতি সর্ব ক্ষণ বানিয়ে যাওয়ার নামই হল রাজনীতি। আবার আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তা হলে ‘গরমিন্ট’ (সরকার) মানে কী? ওই রাজনীতিবিদ তখন আমাকে বলেছিলেন, প্রতিটি বিষয় খুব ভাল করে (গর) দেখার পর এক মিনিট (মিন্ট) বাদে তা ভুলে যাওয়ার নামই হল গরমিন্ট!” কিন্তু তখন তিনি জানতেন না যে সেই রাজনীতিকেই পরবর্তীকালে বেছে নেবেন। তবে অভিনয়ের মঞ্চে তিনি রাজনৈতিক টিপ্পনী করলেও নিজের রাজনৈতিক জীবনে সেই টিপ্পনী থেকে দূরেই থেকেছেন। যে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে কৌতুকের মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করে এসেছেন। সেই মঞ্চেই ভর করে তিনি পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement