একটি বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট ঘিরে ১১ অগস্ট রাতে বেঙ্গালুরুতে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত।
বেঙ্গালুরুতে হিংসার ঘটনার চার দিন পর প্রাণ হারালেন আরও এক যুবক। এই নিয়ে ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চার। তবে ঠিক কী কারণে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। পুলিশের গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি উঠলেও তা খারিজ করে দিয়েছে বেঙ্গালুরু প্রশাসন।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সইদ নাদিম (২৪)। কেজি হাল্লি এলাকার বাসিন্দা এসি মেকানিক নাদিমকে বেঙ্গালুরুতে হিংসার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছিল ১২ অগস্ট। এর পর আদালতে পেশ করা হলে তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট। জেলে থাকাকালীনই বুকে-পেটে ব্যথার কথা জানান নাদিম। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচারও করা হয়। তবে শনিবার বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার কমল পন্থ জানিয়েছেন, হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে নাদিমের। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের আগে পরীক্ষায় নাদিমের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গিয়েছিল। তবে অস্ত্রোপচার-পরবর্তী চিকিৎসায় আর সাড়া দেননি নাদিম।
নাদিমের মৃত্যুর পর বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠতে থাকে, পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তবে বেঙ্গালুরুর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) হেমন্ত নিম্বলকর সে দাবি নস্যাৎ করে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন সংঘর্ষে আহত অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়েছিল নাদিমকে। সেই আঘাতের ফলেই মৃত্যু হয়েছে নাদিমের।
হিংসার সূত্রপাত হয় পুলকেশীনগরের কংগ্রেস বিধায়ক এ শ্রীনিবাসমূর্তির এক আত্মীয় পি নবীনের একটি ফেসবুক পোস্টকে ঘিরে। একটি বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট ঘিরে ১১ অগস্ট রাতে বেঙ্গালুরুর ডিজি হাল্লি এবং কেজি হাল্লিতে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। ওই বিধায়কের বাড়ির বাইরে জমায়েত হয়ে উত্তেজিত জনতা ব্যাপক ভাঙচুর শুরু করে। হামলা হয় বিধায়কের বাড়িতেও। এর পর তাঁর বাড়ির বাইরে রাখা মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় ডিজি হাল্লি এবং কেজি হাল্লি থানার ভিতরেও। পুলিশের গাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। রাতেই বেঙ্গালুরুর ওই দুই এলাকায় শুরু হয় চরম অশান্তি। লাঠিচার্জ করে বা কাঁদানে গ্যাস চালিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় উত্তেজিত জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। তাতে প্রাণ হারান তিন জন। সঙ্ঘর্ষের ঘটনায় জখম হন অন্তত ৭০ জন পুলিশকর্মী-সহ বহু মানুষ।
আরও পড়ুন: দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে কি? মোদী সরকারকে প্রশ্ন সনিয়ার
আরও পড়ুন: বাজপেয়ীর মৃত্যুদিবসে শ্রদ্ধা জানিয়ে ভিডিয়ো টুইট করলেন মোদী
আরও পড়ুন: ছ’মাস বরফে চাপা, গুলমার্গে নিয়ন্ত্রণরেখায় উদ্ধার সেনা জওয়ানের দেহ
বেঙ্গালুরু পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দু’শোরও বেশি। এ ছাড়া ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আরও অনেককে আটক করা হয়েছে।