সফরে: অরুণাচলের দিরাঙের একটি মঠে দলাই লামা। বৃহস্পতিবার। ছবি: রয়টার্স।
দলাই লামাকে সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদী সরকার রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ তুলে গত কালই ক্ষোভ জানিয়েছিলেন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র। আজ সরাসরি ভারতকে হুমকিই দিল চিনা সরকারি সংবাদপত্র।
যার মোদ্দা বক্তব্য— চিন চেপে ধরলে ভারত শক্তিতে পেরে উঠবে কি? এমনকী ইচ্ছে করলে চিন যে কাশ্মীরেও নাক গলাতে পারে, রেখেঢেকে সেই হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে ‘গ্লোবাল টাইমস’-এর ওই সম্পাদকীয়তে।
দলাই লামার অরুণাচল সফর নিয়ে গোড়া থেকে অসন্তোষ জানিয়ে আসছে চিন। আজ কার্যত তা চরমে উঠল বলেই মনে করছেন অনেকে। ওই সম্পাদকীয়তে দাবি করা হয়েছে, চিনের আর্থিক বৃদ্ধির হার ভারতের চেয়ে অনেক বেশি, ভারত মহাসাগর তাদের সামরিক শক্তির নাগালে, ভারত-লাগোয়া দেশগুলির সঙ্গে চিনের সুসম্পর্কও রয়েছে। এর পরেই সেই মোক্ষম কথাটি। বলা হয়েছে, ‘‘উত্তর ভারতের অশান্ত রাজ্যটি চিনা সীমান্ত ঘেঁষা। এই অবস্থায় চিন যদি ভূকৌশলগত খেলায় নামে, তা হলে কি দিল্লি এঁটে উঠতে পারবে?’’
দিল্লি মনে করছে, ‘উত্তরের অশান্ত রাজ্য’ বলতে কাশ্মীরের কথাই বলেছে চিন। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে চিনা অর্থনৈতিক করিডর তৈরিতে আপত্তি রয়েছে ভারতের। সেই তিক্ততাই নয়া মাত্রা পেয়েছে দলাই লামার সফরকে ঘিরে। দিল্লি অবশ্য প্রকাশ্যে একাধিক বার বলেছে, তিব্বতি ধর্মগুরুর সফর একান্তই ধর্মীয়। কিন্তু সেই যুক্তি মানতে নারাজ চিন। ওই সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, ‘‘দলাই লামার অরুণাচল সফরের মাধ্যমে চিনকে চাপ দিতে চাইছে ভারত। আর সেই উদ্দেশ্যে তাঁকে কূটনৈতিক অস্ত্র করছে। এটা উদ্ভট ও অমার্জিত রাস্তা। চিনের কাছে দলাই লামার ভাবমূর্তি চূড়ান্ত রাজনৈতিক। কাজেই তাঁর সঙ্গে কোনও দেশ কী রকম সম্পর্ক রাখছে, তার প্রভাব পড়ে গোটা চিনে।’’
বিশেষজ্ঞদের অবশ্য বক্তব্য, চিনের আগ্রাসী মনোভাব প্রত্যাশিতই ছিল। সব জেনেশুনেই দলাই লামার বিষয়টি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী পদক্ষেপ করেছে ভারত। অরুণাচল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এবং দলাই লামাকে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন, এমন কোনও প্রমাণ চিনের কাছে নেই। তাই চিনকে রাখতে হবে নরমে-গরমে। কারণ, খুব বেশি ব্যাকফুটে গেলে পেয়ে বসবে বেজিং। এ দিন অরুণাচলে দলাই লামা ফের মুখ খুলেছেন তিব্বত নিয়ে। অভিযোগ করেছেন, চিন-অধিকৃত তিব্বতের অবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু মিডিয়ার সেন্সর করে চিন তা সামনে আসতেই দেয় না।