স্নানযাত্রা: জগন্নাথের গজানন বেশ।
এমনটা নাকি ঘটেনি গত ১০০ বছরে।
পান্ডাদের দাপটে পুরীর মন্দিরে এমন দৃশ্য ভাবাই যেত না। স্নানপূর্ণিমায় ১০৮ ঘড়া জলে স্নান সেরে জগন্নাথদেব গজানন বেশ ধারণ করা মাত্র শোলার মুকুট, শুঁড় কার্যত ছিঁড়ে নিতেন সংশ্লিষ্ট পান্ডারা। নিন্দুকে বলে, ওই শোলার টুকরো পুণ্যলোভী ভক্তকে বিক্রি করা হত। জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়েতদের আচরণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রোষে এ বছর প্রভুর মুকুট রক্ষা পেল বলে মনে করছে মন্দির প্রশাসন। স্নানপূর্ণিমা থেকে রথযাত্রার শেষ পর্যন্ত জগন্নাথের সেবায়েত দয়িতাপতিদের নিজোগ বা সমিতি-কর্তা রাজেশ দয়িতাপতিই জানিয়েছেন, প্রভুর মুকুট বা শুঁড়ে এ বার কারও হাত পড়েনি। শুক্রবার রাজেশ বলেন, ‘‘মন্দিরের নতুন মুখ্য প্রশাসক প্রদীপ্তকুমার মহাপাত্রকে কথা দিয়েছিলাম! আচার শেষে মুকুট ওঁর হাতে আস্ত তুলে দিয়েছি।’’
ফলে, স্নানপূর্ণিমায় পুরীতে হাজির লাখো ভক্ত বিরল দৃশ্য চাক্ষুষ করেছেন। পুরীর শ্রীমন্দিরের রত্নসিংহাসন থেকে বেরিয়ে আনন্দবাজারের কাছে স্নানমণ্ডপে স্নান-টান সেরে রীতিমাফিক গণেশ হয়ে ওঠেন জগন্নাথ। গজানন রূপে জগন্নাথের খিদেও নাকি ছ’গুণ বেড়ে যায়। মন্দিরে সাধারণত, ঠাকুরের সামনে ভোগ থাকে। স্নানপূর্ণিমায় তা চার দিকে ছড়িয়ে রাখা হয়। এ বার রাত সওয়া ১১টা অবধি গজাননরূপী জগন্নাথকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন ভক্তেরা।
দয়িতাপতিদের ‘মনিটর’ বা বড়গ্রাহী জগন্নাথ সোয়াঁইন মহাপাত্র, রামচন্দ্র দাস মহাপাত্র প্রমুখ খুশি। রামচন্দ্র বললেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে সেবায়েতদের শৃঙ্খলা বেড়েছে। মুকুটের টুকরো বিক্রি ঠেকানো গিয়েছে।’’ দয়িতাপতিদের দাবি, এত স্নান করে মানবলীলায় জগন্নাথের কাঠের শরীরে ধূম জ্বর এসেছে। এ হল প্রভুর ‘অনশর-পর্ব’। তিনি সুস্থ হয়ে রথে ওঠা পর্যন্ত মন্দিরে জগন্নাথ-দর্শন বন্ধ থাকবে।