ওয়েনাড়ে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই।
ধস হোক বা বন্যা, কোভিড হোক না কোনও ঘূর্ণিঝড়— রাজ্য যখনই কোনও দুর্যোগের মুখে পড়েছে, তা সে রাজ্যের যে প্রান্তই হোক না কেন, স্বেচ্ছায় ছুটে গিয়েছেন তিনি। হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন উদ্ধারকাজে। এ ভাবেই গত ১৮ বছর ধরে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কোন্ডোট্টির বাসিন্দা বশির কালাদিপরম্বিল।
বয়স চুয়াল্লিশ। কেরলের কোন্ডোট্টির বাসিন্দা। তিনি এখন ওয়েনাড়ে। একের পর এক মৃতদেহ আসছে আর সেগুলি চিহ্নিত করার কাজ করে চলেছেন অক্লান্ত ভাবে। গত কয়েক দিনে ওয়েনাড়ের এক মর্গে এ ভাবেই কাজ করে চলেছেন বশির। চোখেমুখে ক্লান্তি। কিন্তু সেই ক্লান্তিও তাঁর কর্তব্যের কাছে হার মেনেছে। রাজ্যের যেখানেই দুর্যোগ হয়েছে, সেখানেই বশির হাজির হয়েছেন।
পেশায় বিদ্যুৎমিস্ত্রি বশির। কিন্তু দুর্যোগের ঘটনা তাঁকে বার বার টেনে নিয়ে গিয়েছে। দুর্যোগে মৃতদেহগুলি শনাক্ত করতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করা, শনাক্ত হয়ে গেলে সেই দেহ পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া— এ সবই তিনি স্বেচ্ছায় করেন বলে জানিয়েছেন বশির। রাজ্যের অনেক বড় বড় দুর্যোগে তিনি ছুটে গিয়েছেন, তা সে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ওকচির ঘূর্ণিঝড় হোক, ২০১৯ সালের কাভালাপ্পারার ভূমিধস বা ২০২০ সালের কোভিড অতিমারি এবং কোঝিকোড়ে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা— সবেতেই হাজির ছিলেন বশির।
তাঁর কথায়, “এত বড় বড় দুর্যোগের সাক্ষী থেকেছি। এই হাতে অনেক লাশ ঘেঁটেছি। কিন্তু ওয়েনাড়ের দৃশ্য আমার মনকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে। যখন একের পর এক শিশুর দেহ হাতে তুলছি, কেঁপে উঠছি। এ রকম অভিজ্ঞতা আগে কখনও হয়নি।” গত ৩০ জুলাই মাঝরাতে ওয়েনাড়ের বুকে নেমে আসে ভয়ানক বিপর্যয়। ভূমিধসের জেরে তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এখনও নিখোঁজ বহু।