ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি ব্যাঙ্ক কর্মীদের

কোথায় টাকা! এক দিকে সরকারের নীরবতা, অন্য দিকে টাকা না-পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠা মানুষ। এর মাঝখানে ভয়ানক চাপে পড়ে যাওয়া ব্যাঙ্ককর্মীরা এ বার ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিলেন সরকারকে।

Advertisement

অঞ্জন সাহা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৫৬
Share:

ছবি: সংগৃহীত

কোথায় টাকা! এক দিকে সরকারের নীরবতা, অন্য দিকে টাকা না-পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠা মানুষ। এর মাঝখানে ভয়ানক চাপে পড়ে যাওয়া ব্যাঙ্ককর্মীরা এ বার ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিলেন সরকারকে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই দেশের সাধারণ মানুষের সামনে সরকারের মুখ হয়ে উঠেছেন ব্যাঙ্কগুলির কর্মী-অফিসাররা। এক মাস জুড়ে কাজের প্রবল চাপের পরেও মানুষের যাবতীয় ক্ষোভের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাঁদেরই। এটিএমে টাকা নেই, ভিড় বাড়ছে ব্যাঙ্কে। সকাল থেকে রাত— পরিশ্রম করেও মুখে হাসি ফোটানো যাচ্ছে না কারও। ২০০০-এর নোট কেউ নিতে চাইছে না, হাতে নেই ১০০ ও ৫০০ টাকার পর্যাপ্ত জোগান। গত এক মাসে টাকা তোলা, জমা দেওয়ার সীমাও বদলে গিয়েছে বারবার। সব মিলিয়ে মানুষের ক্ষোভের পাহাড়ের মুখোমুখি ব্যাঙ্ক কর্মীরা।

কর্মচারীদের ক্ষোভ এমন স্তরে পৌঁছেছে যে পরের সপ্তাহে বৈঠকে বসছে দেশের ব্যাঙ্কগুলির কর্মী ও অফিসারদের সংগঠন। ব্যাঙ্ক কর্মীদের মধ্যে সব থেকে বড় সংগঠন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (এআইবিইএ)। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সি ভি বেঙ্কটচলম বলেন, ‘‘এটিএম কাজ করছে না। ব্যাঙ্কে টাকা দিচ্ছে না রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। গ্রাহকদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের। এই পরিস্থিতিতে আমরা ধর্মঘটে যাওয়ার কথা ভাবছি।’’ চেন্নাই থেকে টেলিফোনে তিনি জানান, ব্যাঙ্কগুলির পরিস্থিতি নিয়ে দু-এক দিনের মধ্যেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে হুঁশিয়ারি দিয়ে চিঠি পাঠানো হবে। বেঙ্কটচলমের মন্তব্য, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে বলতে চাই, হয় টাকার ব্যবস্থা করুন। না হলে ব্যাঙ্ক বন্ধ করে দেওয়া হোক!’’ তাঁর ক্ষোভ, ‘‘যত টাকা ব্যাঙ্কের কাছে আসা প্রয়োজন, তার ২০ শতাংশও মিলছে না। অথচ সরকার বলছে সব ঠিক আছে।’’

Advertisement

এআইবিইএ নেতা বেঙ্কটচলম ও অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (এআইবিওএ)-এর সাধারণ সম্পাদক এস নাগরাজন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ)-র চেয়ারম্যানের কাছে গোটা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে ক্ষোভ জানিয়েছেন। বলেছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ২ লক্ষ এটিএমের মধ্যে ৩৫ হাজার রয়েছে প্রত্যন্ত এলাকায়। সেখানে টাকা তো নেই-ই, নতুন ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোটের ব্যবস্থা করতে এটিএমগুলির যে যান্ত্রিক বদলের প্রয়োজন, সেটাও পুরোপুরি করা হয়নি। ১০০ টাকার নোটও মিলছে না। তাই ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের থেকে সব চাপ আসছে ব্যাঙ্কেই। এই অসহায় অবস্থায় সরকারের উপর চাপ বাড়াতেই তাই ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি। ব্যাঙ্ক কর্মী সংগঠনগুলি দাবি তুলেছে, কত টাকা সরবরাহ করা হচ্ছে, প্রতিদিন তা মানুষকে জানাক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বেঙ্কটচলমের মন্তব্য, ‘‘নানা রকম গল্প বন্ধ করে টাকার জোগানোর আসল কাজটা করুক সরকার!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement