বিএসএফ-বিজিবির বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।
অসম-মেঘালয়ে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ নিয়ে প্রতি বারই বিএসএফ বিজিবি-কে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সতর্ক করে। কিন্তু এ বারের বিএসএফ-বিজিবির বৈঠকে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষীরাই উল্টে অভিযোগ তুললেন, ভারত থেকে সে দেশে অনুপ্রবেশ ঘটছে। চলছে অপহরণ। বাংলাদেশ সরকার বৈঠকে আরও জানায়, ভারত থেকে ব্যাপক হারে বাংলাদেশে গরু পাচার হওয়ায় সে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। ভারত সরকার যেন অবিলম্বে কঠোর হাতে গরু পাচার আটকায়।
চার দিনের বৈঠকে বিজিবির এডিজি মহম্মদ জাহিদ হুসেনের নেতৃত্বে কুমিল্লা, রাঙামাটি, রংপুর, শ্রীহট্ট, ময়মনসিংহ ও খাগড়াচরির সেকশন কম্যান্ডাররা অংশ নেন। ছিলেন বাংলাদেশ বিদেশমন্ত্রক, যুগ্ম নদী কমিশন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধিরাও।
জাহিদ হুসেন বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ভারতের ভিতর দিক থেকেও প্রচুর গরু প্রতি দিন বাংলাদেশে ঢুকছে। তারা তো নিজেরা সীমান্ত পার করতে পারে না। তাই ভারতের পুলিশ-সীমান্তরক্ষীদের আরও সতর্ক হতে হবে। ভারতের গরু না ঢুকলে বাংলাদেশের পশুপালক, দুগ্ধব্যবসায়ীদের অবস্থা উন্নত হবে।’’
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার ৯৪ শতাংশ সিসিটিভি ক্যামেরাই বিকল!
বিএসএফের মেঘালয় সীমান্তের আইজি পি কে দুবে জানান, এ নিয়ে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা টহলের ব্যবস্থা হবে। বিজিবির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, বিএসএফ নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের উপরে গুলি চালিয়েছে। ভারতের দিক থেকে চলছে অনুপ্রবেশ, অপহরণের ঘটনা। চোরাচালানও বেশি ঘটছে ভারতের দিক থেকেই।
বিএসএফ জানায়, নিতান্ত বাধ্য না হলে তারা গুলি চালায় না। সীমান্তে প্রাণহানি ঠেকাতে এখন পাম্প গান, স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করা হচ্ছে। বিএসএফ বাংলাদেশের মাটিতে থাকা জিএনএলএ, এনএলএফটি, আলফা, এনডিএফবি, এইচএনএলসি শিবিরের অস্তিত্ব নিয়ে বিজিবিকে সতর্ক করে। দুবের দাবি, ভারতের জঙ্গিরা বাংলাদেশের মাটিতে থেকে, সেখানকার মেয়ে বিয়ে করে, পরিচয় বদলে বহাল তবিয়তে আছে। এমনকী আলফার শীর্ষনেতা দৃষ্টি রাজখোয়াও শেরপুরের বড়াগজনি এলাকায় এক গারো মেয়েকে বিয়ে করে অন্য নামে আছেন।
বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের ভারতের গ্রামে ঢুকে মারধর, ডাকাতি করার ঘটনা, জাল টাকা, মাদক, গরু ও অস্ত্রপাচারের বিষয়গুলি নিয়েও আলোচনা চলে। সিদ্ধান্ত হয় সীমান্তে অপরাধ ও চোরাচালান বন্ধে দুই পক্ষকে আরও হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে।