লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, উমা ভারতী-সহ প্রবীণ বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে বাবরি মামলা দু’বছরের মধ্যে শেষ করতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। ওই বিচার রায়বরেলী থেকে লখনউয়ে সরানো হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে বিচারপতি পিনাকীচন্দ্র ঘোষ ও বিচারপতি রোহিন্টন নরিম্যানের বেঞ্চ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে এই মামলায় সিবিআইয়ের তৎপরতায় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে আডবাণী শিবির।
প্রবীণ বিজেপি নেতাদের একাংশের মতে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আডবাণী, জোশীদের নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তার মধ্যেই ৬ এপ্রিল আডবাণী, জোশী-সহ প্রবীণ নেতাদের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিচারের আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে সিবিআই। শীর্ষ আদালত রোজ এই মামলার শুনানি করার ইঙ্গিত দিয়েছে। এক বর্ষীয়ান বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘এই মামলার রোজ শুনানি হলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আডবাণীজিদের প্রার্থী হওয়ার প্রশ্ন থাকবে না। তাতে তো নরেন্দ্র মোদী খুশিই হবেন।’’
বাবরি ভাঙা নিয়ে আলাদা মামলা চলছে রায়বরেলী ও লখনউয়ের আদালতেও। রায়বরেলীতে অভিযুক্ত শীর্ষ নেতারা। লখনউয়ে সাধারণ করসেবকদের দল। আডবাণী-সহ শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের চার্জ তৈরিতে রাজি হয়নি লখনউয়ের আদালত। ইলাহাবাদ হাইকোর্টও সেই নির্দেশ বজায় রাখে। ইলাহাবাদ হাইকোর্টের সেই রায়েরই বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে গিয়েছে সিবিআই। আলাদা আবেদন জানিয়েছেন বাবরি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হাজি মেহবুব আহমেদ। আজ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতিরা বলেন, ‘‘২৫ বছর ধরে এই মামলা চলছে। আমরা চাই প্রতি দিন শুনানি চালিয়ে মামলা দু’বছরের মধ্যে শেষ করতে।’’ বিচারপতিদের কথায়, ‘‘মামলার সঙ্গে যুক্ত অনেকে মারা গিয়েছেন। আরও অনেকে হয়তো শীঘ্রই মারা যাবেন। তাই দ্রুত নিষ্পত্তি প্রয়োজন।’’
আডবাণীর আইনজীবী কে কে বেণুগোপাল বলেন, ‘‘লখনউ ও রায়বরেলীর মামলার যৌথ শুনানির আর্জি খারিজ করেছিল হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টও বলেছিল, উত্তরপ্রদেশ সরকার চাইলে রায়বরেলীতে আলাদা মামলা চালাতে পারে।’’ কিন্তু আবেদনকারী হাজি মেহবুব আহমেদের আইনজীবী কপিল সিব্বল যুক্তি দেন, দু’টি মামলাই একই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। সেই ঘটনার পিছনে নির্দিষ্ট ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে অভিযোগ। তাই দুই মামলার শুনানি একই সঙ্গে হওয়া উচিত। সিবিআইয়ের আইনজীবী নীরজ কিষণ কউল জানান, আডবাণী, জোশীদের বিরুদ্ধে দেওয়া যৌথ চার্জশিট হাইকোর্টে খারিজ হয়নি। আডবাণীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এখনও রয়েছে। তার বিচার হওয়া প্রয়োজন।