ছাত্র বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি।
জেএনইউ-র সঙ্গে আমার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পুলিশ, আধাসেনার উপস্থিতি আমাকে যন্ত্রণা দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের মনোভাব বুঝতে চান না। যুক্তির পরিবর্তে বলপ্রয়োগে পড়ুয়াদের অসন্তোষকে তাঁরা দমন করতে চাইছেন বলেই ক্যাম্পাসে পুলিশ, আধাসেনা ডাকতে হচ্ছে।
১৯৯৯ সাল। তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবাণী আমাকে উপাচার্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। আমি দায়িত্বে থাকার সময়ও জেএনইউয়ে কম গোলমাল হয়নি। কিন্তু কখনওই পুলিশ প্রবেশের অনুমতি দিইনি। কারণ, দমন-পীড়ন চালিয়ে পড়ুয়াদের অসন্তোষ কখনও দূর করা যায় না। তাঁদের মনোভাব বুঝতে হয়। ধৈর্য্য ধরে তাঁদের কথা-দাবি শোনা জরুরি। তবেই পড়ুয়াদের মন জয় করে তাঁদের অসন্তোষ দূর করা সম্ভব। একটা একটা প্রক্রিয়া। এটা এক দিনে সম্ভব নয়।
ক্যাম্পাসে পুলিশ, আধাসেনার উপস্থিতির জন্য শুধু জেএনইউ কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে লাভ নেই। কেন্দ্রীয় সরকারও এর দায় এড়াতে পারে না। আবারও বলছি, আমার সময়ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনেকবারই অশান্তি হয়েছে। কিন্তু কোনও গন্ডগোলে একটি বারের জন্যও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের থেকে আমি কোনও ফোন পাইনি। এটা হল রাজনৈতিক দূরদর্শিতা। বলতে বাধ্য হচ্ছি, বর্তমান প্রশাসকেরা বুদ্ধি ও যুক্তির চেয়ে বলপ্রয়োগের উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাই তাঁরা উর্দিধারীদের উপরে বেশি আস্থা রাখছেন।
(লেখক জেএনইউয়ের উপাচার্যের প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্টা)