ভোটপর্বে পরস্পরের বিরুদ্ধে ভোটারদের ‘প্রভাবিত’ করার অভিযোগ করে রাজনৈতিক দলগুলি। সেই ‘প্রভাব’ কাটানোর লক্ষ্যে এ বার পদক্ষেপ করতে চাইছে নির্বাচন কমিশন।
ভোটের দিন ভোটারদের ‘সাহায্য’ করতে বুথের ২০০ মিটার বাইরে ক্যাম্প অফিস করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। অভিযোগ, সেই ক্যাম্প অফিস থেকেই ভোটারদের ‘প্রভাবিত’ করা হয়। সেখান থেকে গোলমাল পাকানোর অভিযোগও ওঠে। এই অবস্থা পাল্টাতে এ বার ভোটের দিন ‘ভোটার অ্যাসিস্ট্যান্স বুথ’ (ভাব) খুলতে চলেছে কমিশন। সামনেই মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগ়ঢ়, রাজস্থান, মিজোরাম এবং তেলঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচন। এই পাঁচ রাজ্যে ‘ভাব’-এ উপস্থিত কমিশনের প্রতিনিধিরা ভোটারকে সংশ্লিষ্ট বুথের ভোটার তালিকার নম্বর জানাবেন এবং বুথ সম্পর্কে পরামর্শ দেবেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সাধারণ ভোটারদের অনেকে রাজনৈতিক দলের সংস্রব এড়ানোর জন্য কোনও দলের ক্যাম্প অফিসেই যেতে চান না। ফলে ভোটার তালিকার নম্বর বা অন্য তথ্য জানার প্রয়োজন হলে তাঁরা অসুবিধায় পড়েন। কমিশনের মতে, তাঁদের ক্ষেত্রে ‘ভাব’ যেমন সহায়ক হবে, তেমনই ভোটের দিন ক্যাম্প অফিসে জটলার সম্ভাবনা অনেকটা হ্রাস পাবে। এক কর্তার কথায়, ‘‘গত কয়েকটি উপনির্বাচনে ‘ভাব’ না-থাকলেও কয়েকটি বুথে ‘হেল্প ডেস্ক’ খোলা হয়েছিল। যে সব পোলিং প্রেমিসেসে কমপক্ষে তিনটি বুথ ছিল, তাদের মধ্যে থেকে কয়েকটিকে বেছে নিয়ে এই ডেস্ক রাখা হয়। গত মে মাসের শেষে মহেশতলা বিধানসভার উপনির্বাচনেও কিছু বুথে ‘হেল্প ডেস্ক’ ছিল।
তবে আগামী বছর লোকসভা ভোটে সর্বত্র ‘ভাব’ খোলা যাবে কিনা, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয় কমিশন। লোকসভা ভোটে ‘ভাব’ খুলতে যে বিপুল পরিমাণ প্রতিনিধি প্রয়োজন, তা পাওয়া নিয়েই প্রশ্ন।
‘ভাব’-এর পাশাপাশি এ বার ‘ভোটার গাইড’-ও নিয়োগ করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। এই গাইডরা ভোটের আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র এবং ভিভিপ্যাট-এর বিষয়ে বোঝাবেন। বুথের ভিতরে কী করা উচিত, কী করা উচিত নয় সেই তথ্য সম্বলিত একটি পুস্তিকা তাঁরা ভোটারদের দেবেন। বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)-সহ গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীদের ফোন নম্বর এবং ভোট সংক্রান্ত আরও কিছু তথ্যও সেই পুস্তিকায় থাকবে। কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, তাদের তরফে ভোটার স্লিপ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজ কয়েক বছর আগেই শুরু হয়েছে। এ বার তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ভোটারদের আরও সচেতন করার প্রক্রিয়া। পাঁচ রাজ্যের উপনির্বাচন এবং লোকসভা ভোটেও পথে নামবেন
ভোটার গাইডরা।