—ফাইল চিত্র।
শুধু প্রচার পর্বেই নয়, ভোটের দিনেও ব্যতিক্রমী মিজোরাম। প্রায় বানচাল হতে চলা নির্বাচনের চূড়ান্ত দিনে মিজোরামে রাত ন’টা পর্যন্ত ভোট পড়ল প্রায় ৮০ শতাংশ। ভোট হল শান্তিতে, সুশৃঙ্খল ভাবে, উৎসবের মেজাজে। ভোটের মুখে, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন চলাকালীন কঠিন, টালমাটাল সময়ে দায়িত্ব নিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচনী অফিসার আশিস কুন্দ্রা। আজ প্রশাসন, সংবাদমাধ্যম, বিভিন্ন সংগঠন থেকে শুরু করে ভোটারদের এক সুতোয় গেঁথে তিনিই পাচ্ছেন নায়কের সম্মান।
একাধিক সমীক্ষার দাবি ছিল, এমএনএফের হাতেই আসতে চলেছে ক্ষমতা। আজ নবীন-প্রবীণ ভোটারদের মুখেও শোনা গেল পরিবর্তনের কথা। এ রাজ্যে এক দশকের বেশি কেউ ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেনি। তাই আশায় বুক বেঁধে আজ সকাল-সকাল ভোট দেন এমএনএফ প্রধান জোরামথাঙ্গ। কিন্তু মিজোরামের ইতিহাস এটাও বলছে, জনমত সমীক্ষার উল্টো ফলই বরাবর দেখিয়েছে ব্যালট বা ইভিএম। তাই পাঁচ বারের মুখ্যমন্ত্রী লাল থানহাওলা জোরগলায় দাবি করেন, ‘‘এ বারও নিরঙ্কুশ জয় হবে।’’ যে দলই জিতুক, মিজোরামে আজ জয়ী হল গণতন্ত্র।
ভোটের প্রচার পর্ব ছিল পোস্টার-ব্যানারের দূষণমুক্ত, অস্তিত্ব ছিল না শব্দদানবের। ভোট হল সুশৃঙ্খল ভাবে। স্বেচ্ছাসেবকেরা প্রতিবন্ধী ও বয়স্কদের ধরে ধরে নিয়ে যান বুথে। সিংহভাগ বুথে ছিল বসার ব্যবস্থাও। বুথ থেকে বেরিয়ে হাসিমুখে পোজ রাজ্যের প্রবীণতম ভোটার ১০৮ বছর বয়সি উপা রোছিংগা। ১০৬ বছরের বৃদ্ধা দারোখুমি হুইলচেয়ারে এসে ভোট দিয়ে যান। পাহাড়ি পথ পেরিরে ভোট দিয়ে যান ৯৮ বছরের পি নুছুঙ্গি।
আরও পড়ুন: উনিশের বীজ বুনে সভা রাহুল-নায়ডুর
প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে একটি করে মহিলা পরিচালিত গোলাপি বুথ ছিল। স্থানীয় ভাষায় সেই বুথের নাম ‘ডিংডি’। এটি আসলে এক রকম বুনো ফুল, মিজো কবিরা যাকে সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে তুলনা করেন। ভোটপর্বে খানিক বাধা সৃষ্টি করে যান্ত্রিক ত্রুটি। ৪২টি ভিভিপিএটি, ১৯টি কন্ট্রোল ইউনিট, ২৫টি ব্যালট ইউনিট খারাপ হওয়ায় ওই সব বুথে ভোট চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। কিছু বুথে রাত ৮টার পরেও।
আরও পড়ুন: রেকর্ড ভোট, মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ধন্দে