প্রতীকী ছবি।
কবে কী ভাবে বৃদ্ধা কাছাড় জেলার কালাইন বাজারে আস্তানা গেড়েছেন, কারও মনে নেই। অপ্রয়োজনে বকবক না করলেও সবাই তাঁকে ‘পাগলি’ বলেই এড়িয়ে যান। আগে কোথায় ছিলেন, আত্মীয়পরিজন কেউ রয়েছেন কি না, কেউ কখনও জানার চেষ্টাও করেননি।
কিছু দিন ধরে তাঁর যেন শরীর নড়াতেই কষ্ট। পথচারীরা কিছু দিলে খান। বিষয়টি এলাকার কিছু তরুণের নজরে পড়ে। কাটিগড়া যুব সমাজ একতা মঞ্চ এবং কালাইন ইউনাইটেড ইয়ুথ ক্লাবের এই সভ্যরা তাঁর কাছে গিয়ে দেখেন, হাত ভাঙা। কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে রেখেছেন। তার যন্ত্রণাতেই কাবু। তাঁকে নিয়ে যান হাসপাতালে। তিনি জানান, তাঁর নাম শিবাণী দাস। ঘনিষ্ট বলতে রয়েছে এক ছোট ভাই। মানিক দাস। হাইলাকান্দি জেলার ঘাড়মুড়ায় বাড়ি। কী ভাবে সেখানে যেতে হয়, তাও বুঝিয়ে দেন শারিমুল হক লস্কর, নাসিরুদ্দিন বড়ভুইয়া, কামরুল ইসলামদের। তাঁরাই ওখানকার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে পুলিশের সহায়তায় ভাইকে খুঁজে বের করে নিয়ে আসেন কালাইনে। মানিক দাসও হতদরিদ্র দিনমজুর। স্ত্রী ও তিন সন্তানকে অভাব-অনটনের সংসার। কিন্তু দিদির দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেননি। বরং তাঁকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
শিবাণীর বিয়ে হয়েছিল। সংসার টেঁকেনি। সেই থেকে হাইলাকান্দিতেই পরিচারিকা হিসেবে এক বাড়িতে থাকতেন। মাঝেমধ্যে বাড়ি যেতেন। কিন্তু বছর চারেক আগে একদিন নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। আর সন্ধান পাননি মানিকরা। সেই কাজটাই করে দিলেন শারিমুলরা। বাজার থেকে হাজার সাতেক টাকা সংগ্রহ করে তুলে দেন মানিকের হাতে।