মন্ত্রী জানান, আধার কার্ড থাকা মানেই নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়া নয়। এনআরসিতে নাম না থাকলে তাঁদের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হবে না। এ দিকে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানান, সুপ্রিম কোর্টের এসওপি অনুযায়ী শুধুমাত্র তাঁদেরই আধার নম্বর দেওয়া হবে যাঁদের নাম এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় উঠবে।
প্রতীকী ছবি।
এনআরসি সংক্রান্ত বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের জেরে অসমে ২৭ লক্ষাধিক মানুষের বায়োমেট্রিক লক হয়ে রয়েছে। তাঁরা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারছেন না, পাচ্ছেন না সরকারি প্রকল্পের সুবিধা ও সাহায্য। তাঁদের আধার নম্বর দিতে তৈরি রাজ্য। বায়োমেট্রিক লকের সমস্যা কাটাতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে রাজ্য সরকার।
মন্ত্রী পীযূষ হাজরিকা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আসু নেতৃত্বের সঙ্গে সোমবার রাতে বৈঠকে বসেন আধার সংক্রান্ত সমস্যা নিষ্পত্তির জন্য তৈরি হওয়া কমিটির সদস্যরা। ছিলেন মন্ত্রী অতুল বরা, অজন্তা নেওগ, কেশব মহন্ত, যোগেন মহন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যাঁদের নাম চূড়ান্ত তালিকায় ওঠেনি ও যাঁদের দাবি-আপত্তির নিষ্পত্তি হয়নি তেমন ব্যক্তিদের বায়োমেট্রিক লক খুলে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে হলফনামা দেবে রাজ্য সরকার। অবশ্য এনআরসি চূড়ান্ত হওয়ার পরেও যাঁদের নাম উঠবে না, তাঁরা আধার কার্ড পেলেও এনআরসিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না।
মন্ত্রী জানান, আধার কার্ড থাকা মানেই নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়া নয়। এনআরসিতে নাম না থাকলে তাঁদের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হবে না। এ দিকে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানান, সুপ্রিম কোর্টের এসওপি অনুযায়ী শুধুমাত্র তাঁদেরই আধার নম্বর দেওয়া হবে যাঁদের নাম এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় উঠবে। কিন্তু আরজিআই এখনও আধারের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেনি। রাজ্যে রিজেকশন লেটার পাঠানোর কাজও শুরু হয়নি। তাই আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক লকের বিষয়টিও ঝুলে রয়েছে। তালিকাছুট ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকে প্রকৃত ভারতীয় হলেও আধার নম্বর ও সংশ্লিষ্ট সুযোগ-সুবিধে পাচ্ছেন না। রাজ্য সরকার তরফে সমস্যাটি নিয়ে কেন্দ্র ও আরজিআইকে একাধিক বার জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও তথ্য দেন, রাজ্যে বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল ২৭,৪৩,৩৯৬ জনের। তার মধ্যে নগাঁও (২,৩৬,৮৯৮) ও বরপেটায় (২,২২,৮৮৩) সর্বাধিক ব্যক্তির বায়োমেট্রিক লক হয়ে রয়েছে। লক্ষাধিক মানুষের বায়োমেট্রিক লক রয়েছে কাছাড়, হোজাই, মরিগাঁও, বাক্সা, বঙাইগাঁও, ধুবুড়ি, দরং জেলায়। অধিকাংশই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা।
এনআরসি প্রসঙ্গে উত্তর করিমগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ কাশ্মীর ফাইলস সিনেমার প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, অসমে ধর্মীয় ও ভাষিক সংখ্যালঘুদের উপরে এনআরসি ও ডিটেনশন শিবিরের নামে যে নির্যাতন, অবিচার চলছে তাতে অসমকে নিয়েও এনআরসি ফাইলস, ডি ভোটার ফাইলসের মতো সিনেমা তৈরি করা যায়। তাঁর কথায়, ‘‘এনআরসি প্রক্রিয়ার নামে বিভিন্ন হেনস্থায় এখনও পর্যন্ত ১৪৮ জন লোকের মৃত্যু হয়েছে। বহু ভারতীয়কে ডিটেনশন শিবিরে রেখে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে।’’