নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে টায়ার জ্বালিয়ে বন্ধ গুয়াহাটির রাস্তায়। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই
নাগরিকত্ব বিল বিরোধী আন্দোলনে গুয়াহাটি-সহ রাজ্যের শহরে-গ্রামে চলল মিছিল, বিক্ষোভ, অবরোধ। নেসো, আসু, কেএমএসএস-সহ বিভিন্ন সংগঠনের ডাকা বন্ধে সমর্থন জানায় কংগ্রেস ও বামদলগুলিও। গুয়াহাটিতে একের পর এক আক্রমণ চলল মন্ত্রী-সাংসদদের বাড়িতে, কনভয়ে। রুক্মিণীগাঁওয়ে বিক্ষোভকারীদের হটাতে পুলিশকে শূন্যে গুলি চালাতে হয়। বিভিন্ন স্থানে চলল লাঠি, কাঁদানে গ্যাসও। জখম শতাধিক। ভাঙা হয়েছে গাড়ি, বাস।
প্রতিবাদকারীরা দিসপুরে বিধায়ক-আবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে অসমে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। কেএমএসএস নেতা অখিল গগৈ আগামী কালও রাজ্য অচল করার ডাক দেন। রাজ্যের বিদগ্ধ সমাজ সব সরকারি অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক দিয়েছে।
এ দিন, শিলঘাট, টংলা, ধেমাজিতে অবরোধে আটকে পড়ে বেশ কয়েকটি ট্রেন। জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়কগুলিতে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করা হয়। ১৪৪ ধারা অমান্য করে প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নামে। ভাঙা হয় বাস-গাড়ি। বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও সিআরপির সঙ্গে অবরোধকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। দু’দিনের টানা বন্ধে কাজিরাঙায় বহু পর্যটক আটকে পড়েন। কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অনশন শুরু করেছেন। ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে আলফার পতাকা ওড়ানো হয়েছে। নিউ গুয়াহাটি স্টেশনে আন্দোলনে যোগ দেন রেলকর্মীদের একাংশও।
অসম আন্দোলনের শহিদের পরিবার আজ সরকারি শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান বয়কট করেছে। তার মধ্যেই গুয়াহাটির বরাগাঁওয়ে শহিদ স্মারক ক্ষেত্রের শিলান্যাস করে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ বলেন, ‘‘আমি কোনও ভুল করে থাকলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না। আমাদের সরকার অসমের ভূমিপুত্রদের কোনও ক্ষতি করবে না।’’
বরাকে অবশ্য বন্ধের বিশেষ প্রভাব পড়েনি। তবে বিল-বিরোধী কয়েকটি সংগঠন বরাকের তিন জেলাতেই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় পিকেটিঙে নামে। পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে চারশোরও বেশি পিকেটারকে গ্রেফতার করেছে। দু’-এক জায়গায় লাঠিচার্জও করতে হয়।
অন্য দিকে, মণিপুরে ইনার লাইন পারমিট (আইএলপি) চালুর ঘোষণায় মেঘালয়েও একই দাবিতে জোরদার হল আন্দোলন। এ দিকে, নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা করাকে ‘অর্বাচিনতা’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য করায় বিভিন্ন সংগঠন রাজ্যপাল তথাগত রায়ের পদত্যাগ দাবি করেছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ আইএলপি-র ‘আনন্দে’ আজ সরকারি ছুটিই ঘোষণা করে দেন।