হিমন্তবিশ্ব শর্মা। —ফাইল চিত্র।
অসম সরকার অপরাধীর বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীল। সমালোচনায় পরোয়া নেই। পুলিশকে কোনও ভাবেই দুর্বল হতে দেওয়া হবে না। পালাতে গেলে খেতেই হবে গুলি। অসম পুলিশের ‘ট্রিগার-হ্যাপি’ মানসিকতা নিয়ে সমালোচনার জবাবে বিধানসভায় এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। তাঁর কথায়, “উড়তা পঞ্জাব চলচ্চিত্রটির মতোই মাদকচক্রের দৌরাত্ম্যে চোখের আড়ালে উড়তা অসম তৈরি হয়ে গিয়েছে। রাজ্যে ৪০০ কোটি টাকার মাদক সাম্রাজ্য চলছে। তাই সমাজকে মাদকমুক্ত ও অপরাধমুক্ত করতে পুলিশ আইনের আওতায় থেকে চূড়ান্ত পদক্ষেপ করবেই।”
ওএনজিসির তিন কর্মী অপহরণে ধৃত আলফার লিঙ্কম্যান তপন বুঢ়াগোহাঁইকে গুলি করার পরে তার সঙ্গী ভূপেন বরুয়াকেও গত কাল গুলি করে তিনসুকিয়া পুলিশ। দু’জনের ক্ষেত্রেই বলা হয়, তারা এসডিপিওর পিস্তল ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল। হিমন্ত সরকার ক্ষমতায় আসার পরে দু’মাসে এমন প্রায় ৩৫টি ঘটনা ঘটেছে। এনকাউন্টারে মৃতের সংখ্যা ১৩। রাজ্য মানবাধিকার কমিশন ইতিমধ্যে এ নিয়ে মামলা রুজু করে নোটিস পাঠিয়েছে মুখ্যসচিবকে। নালিশ জমা পড়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনেও।
আজ বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়ক রকিবুল হুসেন, শেরমান আলিরা পুলিশের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন। জবাবে হিমন্ত বলেন, “এই সরকার অপরাধের ক্ষেত্রে শূন্য সহনশীলতার নীতি নিয়েছে। পুলিশকে গুলি করলে পাল্টা গুলি খাবেই। আমি নিজে সব সমালোচনার বিষ পানে তৈরি। কিন্তু পুলিশকে দুর্বল করতে পারব না।”
অভিযুক্ত অপরাধীকে গুলি করার ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতি বারই দাবি করছে, পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা হয়েছিল। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে হিমন্ত বলেন, “মনে হচ্ছে দাগি অপরাধীদের কর্মশালা করে পুলিশের হাত থেকে পালানোর পন্থা শেখানো হচ্ছে। তাদের অস্ত্রের ব্যবহারও শেখানো হচ্ছে। তাই সকলে একই ভাবে পালানোর চেষ্টা করছে।” পুলিশকে পূর্ণ ছাড়পত্র দিয়ে তিনি বলেন, “পুলিশ আইনের আওতায় থেকে এই ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ করতে পারে। অসম সরকার তাদের রক্ষা করবে।” হিমন্ত আরও জানান, হিন্দি ছবির মতোই আন্ডারওয়ার্ল্ড সক্রিয় ছিল অসমে। তলায় তলায় মাদকে জর্জরিত করে ফেলা হয়েছিল সমাজকে। রাজ্যে প্রায় ৪০০-৫০০ কোটি টাকার মাদক সাম্রাজ্য ছড়িয়ে রয়েছে। পুলিশকেও তাই কড়া হাতেই অল-আউট অভিযানে নামতে হয়েছে। জেল থেকে হাসপাতাল, মুদি দোকান থেকে হোম ডেলিভারি সর্বত্র ছড়িয়ে ছিল মাদক সরবরাহের জাল। আলফা বাদে অন্য জঙ্গি সংগঠনও জড়িত রয়েছে মাদকচক্রে। গত দু’মাসে ১৮৭৯ জন মাদক সরবরাহকারী গ্রেফতার হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ২৮ কেজি হেরোইন। ১৭-১৮ জুলাই উদ্ধার হওয়া সব মাদক প্রকাশ্যে পোড়ানো হবে।