অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। —ফাইল চিত্র।
এনআরসির জন্য বায়োমেট্রিক লক থাকায় অসমের আধার-বঞ্চিত প্রায় সাড়ে ১৬ লক্ষ মানুষের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হলেও চূড়ান্ত তালিকায় নাম না থাকা ১০ লক্ষ মানুষের আধার সমস্যার এখনই সমাধান সম্ভব নয়। বিধানসভায় এ কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। আধার-বঞ্চিতদের মধ্যে অনেক ‘রামভক্ত’ও রয়েছেন বলে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে মন্তব্য করেন কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। হিমন্ত বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরাও চিন্তিত। কিন্তু রামভক্তদের নাগরিকত্বের জন্য আমরা যে ব্যবস্থা করতে চলেছি, তাতে যেন আপনারা বা আপনাদের পাশে বসা ইউডিএফ বিধায়কেরা আপত্তি না তোলেন।” অর্থাৎ নাম না করেও তিনি সিএএ ও তা নিয়ে অসমে বিরোধীদের আপত্তির প্রসঙ্গ তোলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর জবাবে অপ্রস্তুত বিরোধী বিধায়কদের অনেকে কমলাক্ষের মন্তব্যের সমালোচনা করেন। তাঁদের মতে, ধর্মনিরপেক্ষ দলের সদস্য হয়ে এমন মন্তব্য করা তাঁর ঠিক হয়নি। তাঁদের দাবি, অন্য ধর্মের আধার-বঞ্চিতদের বিষয়টিও সরকারকে দেখতে হবে। হিমন্ত বলেন, “কমলাক্ষ একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে মন্তব্য করলেও আমরা সকলের সমস্যার বিষয়টি নিয়েই চিন্তিত এবং কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান সূত্র বার করার চেষ্টা চলছে। রাজ্য সরকারের প্রকল্পে আমরা আধার বাধ্যতামূলক করিনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রকল্পে তা বাধ্যতামূলক।” তিনি মেনে নেন, এনআরসির প্রথম খসড়ায় নাম না থাকার ভিত্তিতে বায়োমেট্রিক লক থাকায় রাজ্যের ২৬,৫২,৭৮৪ জন মানুষ কেন্দ্রীয় সুবিধে, বিভিন্ন প্রকল্প, চাকরি, শিক্ষা, এমনকি বিনামূল্যের চালের সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন, যা দুর্ভাগ্যজনক।
হিমন্ত বলেন, “এনআরসি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আমাদের হাত-পা বাঁধা। আদালত বলেছিল, চূড়ান্ত এনআরসিতে নাম ওঠা সকলে আধার পাবেন ও নাম না থাকা ব্যক্তিরা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের বিচার সাপেক্ষে তা পাবেন। কিন্তু যে হেতু কেন্দ্র এখনও এনআরসির চূড়ান্ত তালিকাকে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে ও আরজিআই বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক রূপ দেয়নি, তাই বায়োমেট্রিকও লক রয়েছে।”