গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতকে বলা হয় ‘বেনিয়া’দের খাসতালুক। বেনিয়ারা হল খাঁটি ব্যবসায়ী। গুজরাতে তাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে যে সন্দেহের অবকাশ নেই তার প্রমাণ দেশের দুই ধনকুবের গোষ্ঠী অম্বানী এবং আদানি। দুই পরিবারই উঠে এসেছে গুজরাত থেকে। আর এই গুজরাতই এশিয়ার সবচেয়ে ধনী গ্রামেরও ঠিকানা।
গ্রামের নাম মাধাপুর। তালুক গুজরাতের কচ্ছ। এই গ্রামের কোনও কোনও গ্রামবাসীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৭০০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ফিক্সড ডিপোজ়িট বা স্থায়ী আমানত রয়েছে।
মাধাপুরে মূলত থাকে পটেল সম্প্রদায়ের মানুষজন। সাম্প্রতিক হিসাব বলছে ওই গ্রামের জনসংখ্যা কম করে ৩২ হাজার। আর এই ৩২ হাজার গ্রামবাসীর জমা সম্পত্তির দেখভালের জন্য মাধাপুর গ্রামে শাখা খুলেছে দেশের ১৭টি ব্যাঙ্ক। স্টেট ব্যাঙ্ক, পিএনবি, ইউনিয়ন ব্যাঙ্কের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা তো রয়েছেই তার সঙ্গে দেশের বহু বেসরকারি ব্যাঙ্কও শাখা খুলেছে ওই গ্রামে। যে সমস্ত ব্যাঙ্কের শাখা এখনও নেই, তারাও ওই গ্রামে শাখা খুলতে আগ্রহী। একটি গ্রামে শাখা খোলার জন্য এত ব্যাঙ্ককে মুখিয়ে থাকতে দেখা যায় না সচরাচর। কিন্তু মাধাপুরের এই সমৃদ্ধির নেপথ্য কারণ কী?
সরকারি তথ্য বলছে, সমৃদ্ধির কারণ বিদেশ থেকে আসা অর্থ। প্রায় ২০ হাজার বাড়ি রয়েছে মাধাপুরে। এর মধ্যে প্রায় ১২০০ পরিবার থাকে বিদেশে। মূলত আফ্রিকার দেশেই তাদের বাস। এই পরিবারের সদস্যরাই বিদেশ থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা পাঠায় স্থানীয় ব্যাঙ্ক এবং পোস্ট অফিসে।
জেলা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান পারুলবেন কারা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মধ্য আফ্রিকার নির্মাণ শিল্প মূলত গুজরাতিদেরই কুক্ষিগত। সেই কাজের সূত্রেই এই গ্রামের বাসিন্দাদের অধিকাংশ থাকেন আফ্রিকার দেশগুলিকে। তবে অনেকে ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, এমনকি আমেরিকাতেও থাকেন। পারুলবেন জানিয়েছেন, যে যেখানেই থাকুন, মাধাপুরের বাসিন্দারা তাদের পুরনো মাটিকে ভোলেন না। তাই উপার্জিত অর্থ তাঁরা রাখেন তাঁদের গ্রামেই।