রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। —ফাইল চিত্র।
তৃতীয় বার নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। সুরক্ষাজনিত পদে নতুন নিয়োগ কার্যত বন্ধ থাকাই লাগাতার দুর্ঘটনার কারণ বলে অভিযোগ বিরোধীদের। আজ রেল বাজেট বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের দাবি, ধারাবাহিক ভাবে রেলে শূন্য পদে নিয়োগ চলছে। একই সঙ্গে, আজ পশ্চিমবঙ্গের রেল প্রকল্পের রূপায়ণে শ্লথ গতির কারণ হিসেবে জমি অধিগ্রহণে রাজ্যের অসহযোগিতাকেই দায়ী করেছেন রেলমন্ত্রী।
পশ্চিমবঙ্গের রেল খাতে চলতি বাজেটে ১৩,৯৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে আজ জানান অশ্বিনী। তাঁর দাবি, ইউপিএ আমলে যেখানে গড়ে ৪৩৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ হত, সেখানে চলতি বছরে তার তিন গুণ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। রেল মন্ত্রকের দাবি, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে মোট ৬০ হাজার কোটি টাকার রেল প্রকল্প চালু রয়েছে। রাজ্যের ১০০টি স্টেশনকে ‘অমৃত ভারত স্টেশনে’ পরিণত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রেলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১০ বছরে রাজ্যে ১২৬১ কিলোমিটার নতুন লাইন পাতা শেষ হয়েছে। বৈদ্যুতিকরণ হয়েছে ১৫৭৮ কিলোমিটার লাইনের। ৪৪৩টি ফ্লাইওভার ও ভূগর্ভস্থ পথ হয়েছে বঙ্গে। খুব দ্রুত দেশের বিভিন্ন শহরের মধ্যে বন্দে ভারতের স্লিপার ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। বঙ্গের ভাগ্যেও বন্দে ভারত স্লিপারের শিকে ছিঁড়বে বলে ইঙ্গিত রেলের আধিকারিকদের।
বঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকা প্রকল্পগুলির জন্য রাজ্য সরকারের ঢিলেঢালা মনোভাবকে দায়ী করেছেন রেলমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে রেলের প্রকল্পে জমি পাওয়ার সমস্যা রয়েছে। ওই কাজে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। যা রাজ্য প্রশাসন করে না।’’ জমি সমস্যা মেটাতে আগামী দিনে ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখবেন বলে জানিয়েছেন অশ্বিনী।
নিচুতলায় নিয়োগ বন্ধের ফলে প্রশিক্ষিত কর্মীর অভাব রেল দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে বিরোধীদের নালিশ। যদিও অশ্বিনী জানান, গত ১০ বছরে রেলে প্রায় পাঁচ লক্ষ নিয়োগ হয়েছে। যার মধ্যে গত বছর নিয়োগ হয়েছে ১.৩০ লক্ষের কাছাকাছি। এ বছরেও ইতিমধ্যেই ৩০ হাজার নিয়োগ করা নিয়ে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। রেলমন্ত্রীর কথায়, ‘‘রেলের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নিয়োগ যথারীতি চালু রয়েছে। বছরে চার বার নিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। চালক পদে, টেকনিক্যাল কর্মী পদে, নন টেকনিক্যাল পদে ও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে বছরে ধারাবাহিক ভাবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’