অশ্বিনী বৈষ্ণব। —ফাইল চিত্র।
‘অশ্লীল বিষয়-সহ মতপ্রকাশের যথেচ্ছাচারের’ জায়গা হয়ে উঠছে সমাজমাধ্যম, আজ কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব লোকসভায় এই কথা বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মন্ত্রীর মতে, এর মোকাবিলায় কড়া আইন দরকার। সঙ্গে প্রয়োজন ঠিক-বেঠিকের প্রশ্নে সামাজিক অবস্থান স্থির করাটাও।
মিরাটের সাংসদ অরুণ গোভিলের প্রশ্নের জবাবে আজ এই মন্তব্য করেন বৈষ্ণব। প্রশ্নটা ছিল, সমাজমাধ্যমের মঞ্চগুলিতে অশ্লীল, যৌনতা সম্পর্কিত বিষয়বস্তুর সম্প্রচার নিয়ন্ত্রণে সরকার এখন কী ভাবে কাজ করছে এবং এই বিষয়ে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা কী? এর জবাবে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকারের ঘোষণা করা ‘তথ্যপ্রযুক্তি (মধ্যস্থতার নিয়মাবলি ও ডিজ়িটাল মাধ্যম নীতিমালা) বিধি’র কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি জানান, এতে অনলাইন বিষয়বস্তুর প্রকাশকদের জন্য নীতি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। গত মার্চে মন্ত্রক কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল বিষয়বস্তু প্রকাশের জন্য ১৮টি ওটিটি মঞ্চকে ব্লক করে দিয়েছে, জানিয়েছেন তিনি।
মন্ত্রীর কথায়, “সমাজমাধ্যম আর ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জমানায় এখন আমরা বাস করি। তবে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও সংবাদমাধ্যমের পরম্পরায় সম্পাদকীয় যাচাইয়ের মাধ্যমে কোনও বিষয়বস্তুর গ্রহণযোগ্যতা ও সত্যাসত্য নির্ধারণের যে জায়গাটা ছিল, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ সেটা কমজোরি হয়ে পড়ছে।” বৈষ্ণবের মতে, সমাজমাধ্যম এক দিকে যেমন স্বাধীন-সংবাদমাধ্যম মঞ্চ হয়ে উঠছে, তারই পাশাপাশি সম্পাদকীয় অনবধানজনিত কারণে হয়ে উঠেছে ‘লাগামছাড়া মতপ্রকাশের পরিসর, যার মধ্যে হামেশাই অশ্লীল বিষয়বস্তুও থাকে’।
বৈষ্ণব জানান, তথ্যপ্রযুক্তি বিধি ২০২১ অনুযায়ী প্রকাশকেরা আইনি ভাবে নিষিদ্ধ কোনও কিছু সম্প্রচার করতে পারবেন না। বয়সের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট পাঁচটি ভাগে বিষয়বস্তু বিভক্ত করতে হবে। শিশুদের জন্য অনুপযুক্ত বিষয়বস্তু যাতে তাদের হাতে না যায়, সে জন্য যথেষ্ট রক্ষাকবচ রাখতে হবে। তাঁর দাবি, “ইউটিউব, ফেসবুক প্রভৃতি মধ্যস্থতাকারী মঞ্চগুলির জন্য তথ্যপ্রযুক্তি বিধিতে দায়িত্ব নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে। আরও বলা আছে যে, অশ্লীল, পর্নোগ্রাফিক, পিডোফিলিক, অন্যের ব্যক্তিপরিসর লঙ্ঘন করা, লিঙ্গ-বর্ণ-জাতির ভিত্তিতে হেনস্থামূলক বা অবমাননাকর কোনও বিষয়বস্তু যাতে সম্প্রচারিত না হয় অথবা মঞ্চগুলির ব্যবহারকারীরা জেনেবুঝে বা ইচ্ছাকৃত ভাবে সেগুলির সম্প্রচার, প্রকাশ, পরিচালনা প্রভৃতি না করতে পারেন, সেই জন্য উদ্যোগী হতে হবে ওই সব মধ্যস্থতাকারী মঞ্চগুলিকেই।” সংবাদ সংস্থা