কার হাতে যেতে চলেছে রাজস্থান সরকারের ভার?
রাজ্যস্থানে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে সচিন পাইলটকে তাঁরা চাইছেন না। ইস্তফার হুমকি দিলেন মরুরাজ্যের ৯২ জন কংগ্রেস বিধায়ক। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, তাঁরা ইতিমধ্যেই বিধানসভার স্পিকার সিপি জোশীর বাসভবনে পৌঁছে গিয়েছেন। তবে তাঁরা ইস্তফাপত্র এখনও জমা দিয়েছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। রাজস্থানের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী, বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত যদি কংগ্রেসে সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন, তা হলে রাজস্থান সরকারের হাল কে ধরবেন, তা নিয়ে রবিবার পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। তা নিয়ে জল্পনার আবহে ৯২ জন বিধায়কের এই ইস্তফার হুমকি।
পরিষদীয় দলের বৈঠকের আগে সন্ধ্যায় রাজ্যের মন্ত্রী শান্তি ধারিওয়ালের বাড়িতে বৈঠকে বসেছিলেন কংগ্রেসের বেশ কয়েক জন বিধায়ক। সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে পাইলটের বিরোধিতায় প্রস্তাবও পাশ হয় বলে খবর দলীয় সূত্রে। গহলৌত-ঘনিষ্ঠ বিধায়কদের বক্তব্য, ২০২০ সালে গহলৌত সরকারের বিরুদ্ধে পাইলট ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেছিলেন। সেই সময় যে সব বিধায়ক সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদেরই এক জনকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হোক।
রাজস্থানের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হতে চলেছেন, তা নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে জল্পনা তুঙ্গে। রাজনীতির কারবারিদেরও নজর ছিল রবিবার রাতে কংগ্রেসের ডাকা পরিষদীয় দলের বৈঠকে দিকে। যেখানে রাজস্থানের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অজয় মাকেন এবং পর্যবেক্ষক মল্লিকার্জুন খড়্গের উপস্থিতিতে মুখোমুখি বসার কথা গহলৌত এবং পাইলটের। সেই বৈঠক আদৌ হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তার মধ্যেই মহাসঙ্কট তৈরি হল মরুরাজ্যে।
প্রাথমিক ভাবে মুখ্যমন্ত্রী পদ না ছাড়ার বিষয়ে অনড় ছিলেন গহলৌত। এক সপ্তাহ আগেই নিজের অনুগত বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করে নিজের শক্তি প্রদর্শন করেছিলেন তিনি। দলের সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু দিন আগেই রাহুল গান্ধী স্পষ্ট করে দেন যে, দল ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতিতেই চলবে। সে ক্ষেত্রে দলের সভাপতি নির্বাচিত হলে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন না গহলৌত।
সভাপতি হলে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হবে, তা ধরে নিয়েই গহলৌত দলকে জানিয়েছেন, তাঁর আস্থাভাজন কাউকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী করা হোক। রাজস্থান বিধানসভার স্পিকার জোশীকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে তাঁর আপত্তি নেই বলে জানান গহলৌত। শনিবার সেই জোশীর সঙ্গে বৈঠক করে জল্পনায় নয়া উপাদান যোগ করেন সচিন। তবে রবিবার ধারিওয়ালের বাড়িতে কংগ্রেস বিধায়কদের বৈঠকেই স্পষ্ট হয়ে যায়, রাজস্থানের কুর্সিলাভের পথ খুব একটা সহজ হবে না পাইলটের পক্ষে। রাতে ৯২ জন কংগ্রেস বিধায়কের ইস্তফার হুমকিতেই তা কার্যত প্রমাণিত।