আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। —ফাইল চিত্র
বিহারের পরে এ বার তামিলনাড়ুতেও বিরোধী ভোট ভাগাভাগি করার কৌশল নেওয়ার অভিযোগ উঠল এআইএমআইএম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়েইসির বিরুদ্ধে। রাজ্যে শশিকলার ভাইপো টিটিভি দিনাকরণের সঙ্গে জোট বেধেছেন তিনি। অভিযোগ উঠেছে, আসলে বিরোধী ভোট ভাগ করে এডিএমকে-বিজেপি জোটের সুবিধা করে দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য।
এডিএমকে জোটের পক্ষে সওয়াল করে রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন শশিকলা। কিন্তু দিনাকরণের দল এএমএমকে ওয়েইসির দলের সঙ্গে জোট গড়ে রাজ্যের ২৩৪টি আসনের সব ক’টিতেই প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। ওয়েইসির দলকে তিনটি আসন ছেড়েছেন দিনাকরণ। তবে শশিকলার ভাইপো দাবি করেছেন, বিজেপি-এডিএমকে জোটকে সফল করার কৌশল নিয়ে ভোটের ময়দানে নামেননি তাঁরা। দিনাকরণের দাবি, তামিলনাড়ুর উত্তর ভাগে শক্তিশালী ওয়েইসির দল। ফলে তাঁদের সঙ্গে জোট গড়ে খুশি তিনি। পুদুচেরিতেও এই দু’দলের জোট হতে চলেছে। একটি টেলিভিশন চ্যানেলে তাঁর দাবি, ওয়েইসি নিজের দলকে জাতীয় স্তরে নিয়ে যেতে চাইছেন। সে কারণেই তামিলনাড়ু, পুদুচেরিতে লড়ছেন তাঁরা।
তবে রাজ্যের ডিএমকে-কংগ্রেস-বাম জোটকে রুখতেই দিনাকরণকে কৌশলে বিজেপি ব্যবহার করতে চাইছে বলে অভিযোগ। কংগ্রেসের দাবি, বিরোধী ভোট ভাগাভাগির লক্ষ্য নিয়েই দিনাকরণ-ওয়েইসির জোট হয়েছে। তামিলনাড়ুতে এ বার ডিএমকে জোটের ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা প্রবল। তা আটকাতেই দিনাকরণকে ব্যবহার করতে চাইছে বিজেপি। দিনাকরণ অবশ্য বলেছেন, ‘‘শশিকলা আমার মা। আমি তাঁকে অমান্য করছি না। তবে তিনিও জানেন, এডিএমকে জোটে যোগ দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’’ শশিকলার রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পিছনে বিজেপির ভূমিকা রয়েছে— এমন জল্পনাও খারিজ করেছেন তিনি।
এরই মধ্যে আসন রফা নিয়ে জট অব্যাহত থাকায় এডিএমকে-র জোট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে অভিনেতা-রাজনীতিক বিজয়কান্তের দল ডিএমডিকে। তারা ২৩টি আসনে লড়তে চেয়েছিল। কিন্তু এডিএমকে ১৫টির বেশি আসন ছাড়তে রাজি হয়নি। তিন দফা আলোচনার পরেও জট না কাটায় আজ বিজয়কান্ত জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। ২০১১ সালের ভোটে রাজ্যে ২৯ আসন জিতেছিল ডিএমডিকে। আজ সেই দলের সাধারণ সম্পাদক এল কে সুধীশ অভিযোগ করেছেন, এ বারের ভোটে শাসক দল এডিএমকে-কে হারানোই লক্ষ্য তাঁদের। কারণ, এডিএমকে পিছন থেকে তাঁদের ছুরি মেরেছে। অন্য দিকে, অভিনেতা কমল হাসনের দল এমকেএম জানিয়েছে, রাজ্যের ১৫৪টি কেন্দ্রে লড়বে তারা। বাকি ৮০টি আসন দুই শরিককে ছেড়ে দিচ্ছে তারা।
ভোট যত এগিয়ে আসছে, দলগুলির প্রতিশ্রুতির বহরও বাড়ছে। কালই ডিএমকে নেতা এমকে স্ট্যালিন জানিয়েছিলেন, সরকার গড়তে পারলে গৃহবধূদের জন্য প্রতি মাসে হাজার টাকা অনুদান দেবে তাঁদের সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ই পলানীস্বামী আজ বলেছেন, জিতলে তাঁদের সরকার গৃহবধূদের হাতে প্রতি মাসে দেড় হাজার টাকা করে তুলে দেবে। বছরে রান্নার গ্যাসের ছ’টি সিলিন্ডার মিলবে বিনা পয়সায়।