মীরা কুমার
শরদ পওয়ারকে বাগে এনে লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার মীরা কুমারকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করলেন সনিয়া গাঁধীরা। একই সঙ্গে ‘বিহার কি বেটি’কে প্রার্থী করে নীতীশ কুমারের উপরে পাল্টা চাপ তৈরি করল বিরোধী শিবির।
এ দিনের পরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে লড়াইটা দাঁড়াল দুই দলিত মুখের— রামনাথ কোবিন্দ বনাম মীরা কুমার।
নীতীশ চলে যাওয়ার পরে বিরোধী ঐক্য ধরে রাখা সহজ ছিল না সনিয়ার কাছে। আশঙ্কা ছিল শরদ পওয়ারকে নিয়ে। বিশেষত মহারাষ্ট্রের একাধিক সমবায় ব্যাঙ্কে পুরনো নোট বদলের ঘটনা ঘিরে তাঁর বিজেপিমুখী হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই আজ বৈঠকের আগেই গুলাম নবি আজাদ ও আহমেদ পটেলকে পওয়ারের সঙ্গে কথা বলতে পাঠান সনিয়া। পাঠানো হয় সীতারাম ইয়েচুরিকেও। বৈঠকে মীরার নাম পাশ করিয়ে নেওয়ার পরে মনোনয়নপত্রে পওয়ার-সহ সকলকে সুকৌশলে সইও করিয়ে নেন সনিয়া। কংগ্রেস সূত্রের মতে, পওয়ার আগামিকাল দুপুরে বিরোধী প্রার্থীর নাম ঘোষণার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সুযোগ দেননি সনিয়া। বিরোধীদের এ দিন বাড়তি প্রাপ্তি আরএলডি-র অজিত সিংহকে পাশে পাওয়া।
আরও পড়ুন:আবেগ নেই, নীতীশের অঙ্কে নিজস্ব সমীকরণ
এ দিন পওয়ার দুই মরাঠি দলিত নেতা ভালচন্দ্র মুঙ্গেকর ও সুশীল শিন্ডের নামে জোর দেন। সঙ্গে তোলেন মীরা কুমারের নাম। কংগ্রেসের বক্তব্য, মরাঠি তাস খেলে কৌশলে নিজের নাম যাতে ওঠে, সেই চেষ্টা করেছিলেন পওয়ার। কিন্তু বৈঠকের আগেই বাকি বিরোধীদের মধ্যে একপ্রস্ত কথা হয়ে যায়। রামনাথের নাম ঘোষণার পর মায়াবতী আরও ‘বড় জনপ্রিয়’ দলিত প্রার্থীর শর্ত রেখেছিলেন। মীরার নাম বলে এ দিন রাজি করানো হয় মায়াকে। ফলে বামেরা গোপালকৃষ্ণ গাঁধী ও প্রকাশ অম্বেডকরের নাম তুললেও শেষ পর্যন্ত মীরার নামেই সম্মতি মেলে। মীরা পরে বলেন, ‘‘জোরালো আদর্শগত ভিত্তিতে এই শক্তিরা একজোট হয়েছে। তাদের প্রতিনিধি হিসেবে আমি ভোটে লড়ব।’’
বৈঠকের পর নীতীশ প্রসঙ্গে সনিয়া বলেন, ‘‘আমি হতাশ নই। তবে আমি সকলকে সমর্থনের আবেদন করছি।’’ লালু প্রসাদ বলেন, ‘‘নীতীশ ধোঁকা দিয়েছেন কি না, জানি না। তবে তিনি ঐতিহাসিক ভুল করতে চলেছেন। তাঁকে আমি বোঝাবো বিহারের মেয়ে মীরা কুমারকে সমর্থনের জন্য।’’
বিরোধীদের প্রার্থী ঘোষণার পরেই অমিত শাহ যান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। রামনাথের জয়ের পথ মসৃণ করতে এখন মরিয়া বিজেপি। কাল সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী, বিজেপি ও এনডিএ-র মুখ্যমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে মনোনয়ন পেশ করবেন রামনাথ কোবিন্দ।