অশোক স্তম্ভ। ফাইল চিত্র ।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন সংসদ ভবনের মাথায় যে জাতীয় প্রতীকটির উন্মোচন করেছেন, তা ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন মহলের দাবি, এই অশোক স্তম্ভের সিংহগুলি হিংস্র। অথচ সারনাথের মন্দিরের যে অশোক স্তম্ভকে ভারতের জাতীয় প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল, তার সিংহগুলি অনেক শান্ত স্বভাবের। সাবেক জাতীয় প্রতীকটির নকশা তৈরির নেপথ্যে অন্যতম মস্তিষ্ক ছিলেন দীননাথ ভার্গব। নকশা তৈরির আগে তিন মাস ধরে প্রতিনিয়ত কলকাতা চিড়িয়াখানা যেতেন তিনি। চিড়িয়াখানায় থাকা সিংহদের সামনে থেকে নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করতেই নাকি তিনি চিড়িয়াখানায় ঢুঁ মারতেন। বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন দীননাথের পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
প্রয়াত দীননাথ-সহ অনেকেই ভারতীয় সংবিধানের পাণ্ডুলিপি সাজিয়ে জাতীয় প্রতীকের নকশা তৈরি করেছিলেন। উত্তর প্রদেশের সারনাথ মন্দিরের প্রাচীন ভাস্কর্য ‘লায়ন ক্যাপিটাল অব অশোক’-এর উপর ভিত্তি করে অশোক স্তম্ভটি তৈরি করা হয়েছিল।
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু সংবিধানের মূল পাণ্ডুলিপি নকশা করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন শান্তিনিকেতনের কলাভবনের তৎকালীন অধ্যক্ষ এবং প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী নন্দলাল বসুকে। নন্দলাল অশোক স্তম্ভের নকশা তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিলেন দীননাথকে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে এমনটাই জানিয়েছেন দীননাথের স্ত্রী প্রভা ভার্গব। তিনি বলেন, ‘‘সেই সময় আমার স্বামী যুবক ছিলেন এবং শান্তিনিকেতনে কলাভবনে পড়তেন। গুরু নন্দলালের নির্দেশের পর, আমার স্বামী টানা তিন মাস ধরে কলকাতার চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করেন এবং সিংহদের হাবভাব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেন।’’
দীননাথ ভার্গব মধ্যপ্রদেশের বেতুল শহরের বাসিন্দা এবং ২০১৬ সালে ইনদওরে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর পরিবারের সদস্যেরা আরও জানিয়েছেন, পুরনো অশোক স্তম্ভের মূল শিল্পকর্মের একটি প্রতিরূপ এখনও তাঁদের কাছে রয়েছে।
ভার্গবের নকশা করা অশোক স্তম্ভের সিংহগুলির মুখ একটু খোলা এবং তাদের দাঁতও দৃশ্যমান। স্তম্ভের নীচে সোনালি রঙে লেখা ‘সত্যমেব জয়তে (সত্যের জয় হোক)’।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।