সবার মাঝে: লালকেল্লার কাছে স্কুলপড়ুয়াদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে। ছবি: এএফপি।
কার্ফু জারি রয়েছে এখনও। কাঁটাতার বিছিয়ে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে মহল্লাগুলি। কার্বাইনধারীদের সদর্প উপস্থিতি আর ভারী বুটের শব্দ উপত্যকার নিত্যসঙ্গী। এ হেন পরিস্থিতিতে আজ লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করলেন, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদই দ্বিতীয় দফায় তাঁর সরকারের প্রারম্ভিক বড় সাফল্য।
প্রধানমন্ত্রী বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আজ কাশ্মীরে যেতে পারেন বলে জল্পনা ছিল প্রশাসনের অন্দরে। শেষ পর্যন্ত তা না হলেও, কাশ্মীর সমস্যার সমাধানই যে তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল, তা স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর দাবি, গত ৭০ বছরে যা করা সম্ভব হয়নি, তা-ই গত ৭০ দিনে করে দেখিয়েছে তাঁর সরকার। বাস্তব হয়েছে বল্লভভাই পটেলের এক দেশ এক সংবিধানের স্বপ্ন।
কিন্তু কাশ্মীরের চলতি অচলাবস্থা নিয়ে আক্রমণের মুখে পড়তে শুরু করেছে সরকার। অবিলম্বে সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য পদক্ষেপ করতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। যত দিন যাবে, বিরোধী আক্রমণের সুর যে তত চড়বে তা প্রশাসনের অজানা নয়। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কিছু কিছু ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি রোহিত কানসল জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকেই রাতের উড়ান চালু হয়েছে শ্রীনগর বিমানবন্দরে। শহরের বেশ কিছু এটিএম ঠিকমতো চলছে না বলে খবর এসেছে। সেগুলি অবিলম্বে মেরামত করতে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এই সব প্রশাসনিক পদক্ষেপের পাশাপাশি আজ কাশ্মীর পরিস্থিতির জন্য ফের নাম না করে কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন মোদী। তিনি বলেন, বিরোধীরা ফেলে রাখার ফলেই ৭০ বছরে ওই সমস্যার সমাধান হয়নি। যা বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে শক্তি জুগিয়েছে। পরিবারতন্ত্র ফুলেফেঁপে উঠেছে, বেড়েছে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতি। মোদী বলেন, ‘‘সংসদের উভয় কক্ষেই দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় কাশ্মীর সংক্রান্ত বিল পাশ হয়েছে। এর থেকেই প্রমাণিত, সবাই এটাই চাইছিলেন।’’ মোদীর মতে, ৭০ বছর ধরে অনেকে চেষ্টা করা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত ফল আসেনি। লক্ষ্যপ্রাপ্তি অধরা থাকলে নতুন করে ভাবতে হয়। তাঁর সরকার সেটাই করেছে।
বিতর্কিত তিন তালাক বিলও এ বার পাশ করিয়েছে কেন্দ্র। মোদীর মতে, এত দিন সংখ্যালঘু নারীরা ভয়ে-ভয়ে জীবন কাটাতেন। তিন তালাক রদ হওয়ায় তাঁরা জোর পাবেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বহু সংখ্যালঘু দেশ ইতিমধ্যেই ওই প্রথা রদ করেছে। আমাদের দেশেও অতীতে সতীদাহ, বাল্যবিবাহ রদ হয়েছে। পণপ্রথার বিরুদ্ধে মানুষ সরব হয়েছে। তা হলে কেন তিন তালাকের মতো প্রথা বাতিল হবে না?’’