হান্দোয়ারায় সেনার গুলিতে হত তিন জঙ্গি।
দিন কুড়িও হয়নি। উরির সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার স্মৃতি এখনও দগদগে। তার বদলা নিতে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছে ভারতীয় সেনা। তার পরেও কাশ্মীরে সেনাকে লক্ষ করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গিরা। বারামুলার পরে আজ হান্দোয়ারার সেনা ছাউনি লক্ষ করে হামলা চালায় তারা।
ভোর তখন পাঁচটা। উত্তর কাশ্মীরের হান্দওয়ারার লাংগেট এলাকায় ৩০ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের ঘাঁটির বেশির ভাগ জওয়ানই আধো ঘুমে। সামনেই কাঁটাতারের বেড়া। তার খুব কাছেই কয়েক জনকে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখেন কয়েক জন জওয়ান। পাল্টা প্রশ্ন করতেই ছুটে আছে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি। মুহূর্তে সজাগ হয়ে যান জওয়ানরা। বুঝতে পারেন, ফের জঙ্গিরা ঘাঁটি আক্রমণের চেষ্টা চালাচ্ছে। পাল্টা গুলি চালায় সেনাও। বেশ কিছু ক্ষণ গুলিযুদ্ধের পরে শেষমেশ খতম করা হয় তিন জঙ্গিকে। তারা অবশ্য প্রথমে পালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেনারা তাদের পিছু ধাওয়া করে প্রত্যেককেই শেষ করে।
তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল অস্ত্র।
উত্তর কাশ্মীরে সেনার এক কর্তার দাবি, আজ ভোরের ওই অভিযান ভারতীয় বাহিনীর কাছে বেশ বড় ধরনের সাফল্য। কারণ ভালমতো প্রস্তুতি নিয়েই নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে এ পারে এসেছিল ওই তিন জঙ্গি। তাদের কাছ থেকে তিনটে একে-৪৭ রাইফেল, গ্রেনেড লঞ্চার ও প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পাওয়া গিয়েছে রেডিও সেট, জিপিএস, মানচিত্র, ওষুধ আর খাবারও। সেনার দাবি, উদ্ধার হওয়া ওষুধের স্ট্রিপগুলি পাকিস্তানে তৈরি। ফলে তারা যে ওই দেশ থেকেই সন্ত্রাস ছড়াতে এখানে এসেছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
একটি সূত্র জানিয়েছে, আরও জঙ্গি ওই এলাকায় লুকিয়ে থাকতে পারে। সেনার দাবি, লাংগেটের আশপাশের এলাকায় জোর তল্লাশি চালানো হচ্ছে। জঙ্গিদের কাছ থেকে চারটি রেডিও সেট উদ্ধার হলেও জিপিএস পাওয়া গিয়েছে তিনটি। সেনার এক কর্তার মতে, অনেক সময় এক এক জন জঙ্গি একটির বেশি রেডিও সেট সঙ্গে রাখে।
শুধু হান্দোয়ারাই নয়, কাল মাঝ রাত থেকে আজ ভোরের মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখা লাগোয়া মোট তিনটি এলাকায় জঙ্গি অনুপ্রবেশের বানচাল করে দিয়েছে সেনা। উত্তর কাশ্মীরে নওগামে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময়ে সেনার গুলিতে মৃত্যু হয়েছে আরও চার জঙ্গির।
বৃহস্পতিবার পিটিআইয়ের ছবি।