লে-র হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী।
কংগ্রেসের ‘আলতো’ আক্রমণ। বিতর্কে সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া। বিভ্রান্তি কাটাতে শেষমেশ সেনার জোরালো বিবৃতি। প্রধানমন্ত্রীর লে হাসপাতাল সফর ঘিরে বিতর্ক শনিবার এই তিন বিন্দু ছুঁয়েই ঘুরপাক খেল ।
বিবৃতিতে সেনার তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, “শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর লে হাসপাতালে ভর্তি জখম সেনাদের দেখতে যাওয়া নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে, তা ক্ষতিকর ও ভিত্তিহীন। সেনা তার সাহসী জওয়ানদের চিকিৎসা কী ভাবে করায়, দুর্ভাগ্যজনক ভাবে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছেন অনেকে। অথচ তাঁদের সেরা চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টাই সব সময় করে সেনা।” যে ভাবে প্রধানমন্ত্রীর হাসপাতালে যাওয়ার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা হয়েছে, তাকেও দুরমুশ করা
হয়েছে বিবৃতিতে।
এই বিতর্ক দানা বাঁধল কী ভাবে?
অভিষেক দত্ত, সলমন নিজ়ামির মতো কয়েক জন কংগ্রেস নেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তোলেন, সত্যিই কি আহত সেনাদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী? নাকি এও তাঁর বিখ্যাত প্রচার-কৌশল? নইলে হাসপাতালে সব আহত জওয়ান একই ভাবে বসে কেন? ডাক্তারের বদলে সেখানে উপস্থিত কি শুধু সরকারি চিত্রগ্রাহক?
আরও পড়ুন: লাদাখের জমি কবে ছাড়বে চিন, উত্তর নেই
কিছু ক্ষণের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া ছয়লাপ। কেউ প্রশ্ন তুলছেন, হাসপাতাল হলে, পিছনে প্রোজেক্টরের পর্দা কেন? কেউ জানতে চাইছেন, ডাক্তার বা নার্স কোথায়? আবার কারও কটাক্ষ, প্রধানমন্ত্রী আসছেন বলে কি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে রোগীর বিছানার পাশের ওষুধ-পত্তর রাখার জায়গাটুকুও! কেউ প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনির পুরনো ছবি দিয়ে বলছেন, ওই ঘরেই সেনাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। সেই ঘর হাসপাতাল হয়ে গেল কী ভাবে? কেনই বা সেখানে মাইক হাতে কথা বলছেন নরেন্দ্র মোদী? বিছানার চাদর এমন টান-টান? স্যালাইন ঝোলানোর আংটা কোথায়?
পিছিয়ে থাকেনি ‘উল্টো পক্ষও’। মনমোহন সিংহ শুয়ে থাকা সেনাদের সঙ্গে দেখা করছেন, সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে উঠতেই তাঁরাও খুঁজে বার করেছেন পাল্টা ছবি। যেখানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সামনেও আহত সেনারা হাসপাতালের বিছানায় এমন সোজা হয়েই বসা। অনেকে বলেছেন, এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে প্রশ্ন তুললে বুমেরাং হতে পারে আঁচ করেই কোনও বড় নেতাকে নামায়নি বিরোধীরা। তুলনায় কম পরিচিত নেতাদের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কে দিতে চেয়েছে বিতর্কটুকু।
দিনের শেষে বিবৃতিতে সেনা জানিয়েছে, লে-র ওই হাসপাতালের একাংশে চিকিৎসা হচ্ছে করোনা রোগীদের। তাই জখম সেনাদের দূরত্বে রাখতে অডিয়ো-ভিডিয়ো প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে বদলে ফেলা হয়েছে একশো শয্যার ওয়ার্ডে। প্রকাশ করা হয়েছে ওই একই ঘরে এর আগে আহত সেনাদের দেখতে আসা সেনাপ্রধান এম এম নরবণের ছবিও।