দিল্লিতে জুন মাস থেকে ফ্রি ওয়াইফাই-যুক্ত বাতানুকূল বাসে যাতায়াত করা সম্ভব হবে। এ জন্য খালি মোবাইল অ্যাপ থেকে ওই বাসের সিট আগে থেকে বুক করতে হবে। দিল্লি সরকার সম্প্রতি দিল্লিতে অ্যাপ-নির্ভর বাস চলানোর কথা ঘোষণা করেছে।
ওলা, উবের-এর মতো কোম্পানিগুলি, যাদের কাছে ৫০টি বা তার বেশি বাস আছে তারা এ জন্য সরকারের কাছে লাইসেন্সের আবেদন করতে পারবে। রেজিস্ট্রেশন শুরু হবে আগামী পয়লা জুন থেকে। জুনের মাঝামাঝি সময়ে অ্যাপ-নির্ভর বাস রাজধানীর রাস্তায় চলা শুরু করবে বলে মনে করছে দিল্লি সরকার। এই বাসগুলির জন্য কিছু নিয়ম নির্দিষ্ট করা হয়েছে। বাসগুলিতে আসন সংখ্যার বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না, আগে থেকে সিট বুক করলেই বাসে ওঠা যাবে ও বাসের ভাড়া অনলাইনে দিতে হবে।
দিল্লির পরিবহণমন্ত্রী গোপাল রাই বলেন, “জানুয়ারি মাসের প্রথম দফার জোড়-বিজোড় ব্যবস্থার সময়ে আমরা মানুষের কাছে অনেক বেশি সহযোগিতা পেয়েছিলাম। কিন্তু এ বার প্রচণ্ড গরমের জন্যই অনেকে জোড়-বিজোড় নিয়ম না মেনে যাতায়াত করছেন। আমাদের প্রত্যেক মাসেই জোড়-বিজোড় ব্যবস্থার পরিকল্পনা আছে। তাই আমরা মানুষকে গাড়ির বদলে একটা ভাল বিকল্প পরিষেবা দিতে চাই। আর তাই আমরা অ্যাপ-নির্ভর বাস আনতে চলেছি।”
যদিও অ্যাপ-নির্ভর বাস নতুন কিছু নয়, নয়ডা, গাজিয়াবাদ, গুরগাঁওতে ওলা-র শাটল নিয়মিত চলে। এগুলি ৪-৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ২০-২৫ টাকার বিনিময়ে যাতায়াত করে, তবে তা একটি নির্দিষ্ট সময়ে চলে ও মেট্রো স্টেশনগুলি পর্যন্ত যাতায়াত করে। এগুলি কোনও সরকারি সংস্থার নিয়ন্ত্রণে চলে না।
আপ সরকার এ রকম বাস পরিষেবা আরও বেশি দূরত্বের জন্য করতে চাইছে। এই বাসগুলিতে যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সিসিটিভি ক্যামেরা রাখা হবে। সঙ্গে মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ‘প্যানিক বাটন’ থাকবে। পরিবহণমন্ত্রী আরও বলছেন যে, “বাসগুলির যাত্রা শুরুর ৫ মিনিট আগে বুক করা যাবে, এবং বুকিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী সুরক্ষার জন্য বাসগুলি যাত্রীদের নাম প্রভৃতি ওয়েবসাইটে দিয়ে দেবে।”
বাস সংস্থাগুলি রুট ও রুটের ভাড়া ঠিক করতে পারলেও বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ এলে ভাড়া সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। রাই এ-ও বলেন, “যদি বাসগুলি অতিরিক্ত যাত্রী নেয় তা হলে বাস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ২,৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে। ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে প্রতি দিন তাদের ৫,০০০ টাকা করে দিতে হবে।”
বাস সংস্থাগুলি কখনও পরিষেবা বন্ধ করতে পারবে না। কিন্তু কোনও বিশেষ কারণে যদি তা করে সে ক্ষেত্রে যাত্রীদের ভাড়ার দ্বিগুণ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। কোনও সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই যদি পরিষেবা বন্ধ হয় তা হলে যাত্রীদের ১০ গুণ টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
এই সমস্ত সিএনজি বাস পার্কিংয়ের দায়িত্ব বাস সংস্থাগুলির হবে। যাত্রীরা অ্যাপ-নির্ভর বাসগুলির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে তা সরকারের অভিযোগ কেন্দ্রগুলিতে জানাতে পারবেন। বাস সংস্থাগুলির মধ্যে যাদের ১০০টি বাস তাদের ২৫ লাখ টাকা, আরও বেশি সংখ্যক বাস হলে ৫০ লাখ ও ৫০০-র বেশি বাস হলে এক কোটি টাকা ব্যাঙ্কে গ্যারান্টি হিসাবে রাখতে হবে।