প্রয়াত কংগ্রেস নেতা এন ডি তিওয়ারির পুত্রবধূ অপূর্বা শুক্লা তিওয়ারি। ইনসেটে, তাঁর স্বামী রোহিত। —ফাইল চিত্র।
জেরা চলাকালীন গত চার দিনে এক বারের জন্যও অনুশোচনার লেশমাত্র ধরা পড়েনি তাঁর চোখেমুখে। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকেই অপূর্বার শরীরী ভাষায় অদ্ভুত পরিবর্তন ঘটেছে। তদন্তকারীদের কি বিভ্রান্ত করতে চাইছেন তিনি? গত ১৬ এপ্রিল প্রয়াত কংগ্রেস নেতা এন ডি তিওয়ারির ছেলে রোহিত তিওয়ারির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তদন্তে উঠে আসে রোহিতের স্ত্রী আইনজীবী অপূর্বার নাম। তাঁর বিরুদ্ধে রোহিতকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। তার পরই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
এক তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, গত চার দিন ধরে টানা জেরা করা হচ্ছিল অপূর্বাকে। সেই সময় এক বারের জন্য ভেঙে পড়েননি অপূর্বা। মুখের মধ্যে একটা কঠোরতার ছাপ ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকেই তাঁর আচরণে অদ্ভুত পরিবর্তন দেখা যায়। অনুশোচনা করতে থাকেন রোহিতকে খুনের জন্য। আর এতেই বেশ ধন্দে পড়েছেন তদন্তকারীরা। প্রশ্ন উঠছে, গত কয়েক দিনে যে মানুষটির মধ্যে অনুশোচনার কোনও চিহ্ন ধরা পড়েনি, হঠাত্ করে এমন পরিবর্তন কেন? তা হলে কি অপূর্বা তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতেই এমন ‘নাটক’ করছেন? ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, অপূর্বা তাঁদের কাছে দাবি করেছেন রোহিতের মা উজ্জ্বলা মাঝেমধ্যেই তাঁদের দু’জনের ব্যাপারে নাক গলাতেন। আর এটাই তাঁদের দু’জনের সম্পর্কে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
রোহিত যে রাতে খুন হন সে দিন ডিফেন্স কলোনির বাড়িতে অপূর্বাও ছিলেন। ওই রাতে দু’জনের মধ্যে বচসাও হয়। জেরায় অপূর্বা পুলিশকে জানিয়েছেন, শ্যালিকার সঙ্গে রোহিতের ঘনিষ্ঠতা পছন্দ করতেন না তিনি। তাঁর সঙ্গে বসে মদ্যপান করাটাও ভাল চোখে দেখতেন না। এ ব্যাপারে রোহিতকে সতর্কও করেন অপূর্বা। কিন্তু তাঁকে বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেন রোহিত। আর তাতেই মাথায় আগুন চেপে যায় অপূর্বার। প্রথমে গলা টিপে ধরেন। রোহিত বাঁচার জন্য চিত্কার করতে গেলে তাঁকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন অপূর্বা।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষাই কি দায়ী? স্বামী হত্যায় ধৃত অপূর্বার কেরিয়ার কিন্তু হাই প্রোফাইল
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পুলিশ জানিয়েছে, রোহিতের ডিফেন্স কলোনির বাড়ির ল্যান্ডলাইনের কল ডিটেল বার করার চেষ্টা করছে। রোহিতের শরীরে পাওয়া আঁচড়ের দাগ অপূর্বার কি না তা খতিয়ে দেখতে তাঁর নখের নমুনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, ঘটনার পর বেশ কয়েক দিন কেটে গিয়েছে। তার পর এই নখের নমুনা তদন্তে কতটা সাহায্য করবে সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য বুধবার ডিফেন্স কলোনির বাড়িতে অপূর্বাকে নিয়ে যায় পুলিশ। ওই তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন, রোহিতকে মাদক খাওয়ানোর পর অপূর্বা তাঁকে খুন করে বলে রোহিতের পরিবারের অভিযোগ।