অনুব্রত মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
গরু পাচার কাণ্ডে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়ে গিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটও দায়ের হয়ে গিয়েছে। ইডি ফের তিহাড় জেলে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর বয়ান নথিবদ্ধ করতে চাইছে। অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ শিবিরের সন্দেহ, এ বার বীরভূমের এই তৃণমূল নেতাকে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। এই সংশয় থেকেই নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ শিবিরে।
এমনিতেই গরু পাচার কাণ্ডে জামিন পাচ্ছেন না অনুব্রত। তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠদের আশঙ্কা, এর উপরে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযোগ আনা হলে অনুব্রতের সমস্যা আরও বাড়বে।
ইডি সূত্রের খবর, এক সপ্তাহ আগে ইডি-র তরফে তিহাড় জেলে বন্দি অনুব্রত মণ্ডলের বয়ান নথিবদ্ধ করার জন্য রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছে। আগামী ২০ জুলাই রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে বিশেষ আদালতের বিচারক রঘুবীর সিংহের বেঞ্চে এই আর্জির ফয়সালা হবে। ইডি-র তদন্তকারী অফিসারেরা মনে করছেন, সম্মতি পেতে অসুবিধা হবে না। আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনের ৫০ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই বয়ান নথিবদ্ধ করা হবে। আইন অনুযায়ী, এই বয়ান আদালতের সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেব গৃহীত হয়।
কোন তদন্তের জন্য অনুব্রতের বয়ান নথিবদ্ধ করা হবে, তা নিয়ে অবশ্য ইডি সরকারি ভাবে কিছু জানায়নি। ইডি সূত্রের বক্তব্য, গরু পাচার কাণ্ডের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। ফলে সেই তদন্তের প্রয়োজনে যে কোনও অভিযুক্তকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে। একই সঙ্গে, প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিতেও অনুব্রতের ভূমিকা ইডি-র আতসকাচের তলায় এসেছে। ইডি সূত্রের অভিযোগ, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে অনুব্রতের যোগ ছিল। মানিক-ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির কলেজ স্ট্রিটের ভাড়া বাড়িতে বেসরকারি বিএড কলেজের চেয়ারম্যানদের নিয়ে একটি সংগঠন শুরু হয়েছিল। ওই সংগঠনের অন্যতম সদস্য ছিলেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার চেয়ারম্যান। যিনি অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ। এ বিষয়ে ইডি দিল্লিতে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে।
অভিযোগ, গরু পাচারের লভ্যাংশের টাকায় বেসরকারি বিএড কলেজ খুলে অযোগ্য প্রার্থীদের এসএসসি ও টেট-এ বিএড এবং ডিইএলইডি-র জাল সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়েছিল। তার মাধ্যমে হাজার হাজার অযোগ্য প্রার্থীকে বিক্রি করা হয়েছিল চাকরি।