তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার। ছবি: সংগৃহীত।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকারের ‘আচরণে’ ক্ষুব্ধ তাঁর দল। মঙ্গলবার জহর সরকার জানিয়েছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি তাঁকে পদত্যাগ করে চলে যেতে বলেন, তবে তিনি তা-ই যাবেন। তৃণমূল শীর্ষ সূত্রের পক্ষ থেকে আজ জানানো হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জহরবাবুর সঙ্গে কোনও কথাই বলবেন না। জহরবাবুর মন্তব্যগুলি নিয়ে কোন স্তরে পদক্ষেপ করা হবে, তা নিয়ে গত কাল রাত থেকেই তৃণমূলের সংশ্লিষ্ট নেতাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। আগামীকাল এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। গত কাল তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ সৌগত রায় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে পারে।
জহরবাবুর ঘনিষ্ঠ সূত্রের বক্তব্য, দুর্নীতির পাশাপাশি তাঁর ক্ষোভের আরও একটি জায়গা হল, তাঁকে দলে নিয়ে কাজে না লাগানো। অর্থাৎ রাজ্যসভায় বলার যথেষ্ট সুযোগ তাঁকে দেওয়া হয় না। এই ইঙ্গিতও পাওয়া গিয়েছে যে, যদি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি পর্যন্ত জহরবাবুকে নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া হয়, তা হলে তিনি সে জন্য অপেক্ষা না-ও করতে পারেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে তিনি আগেই পদত্যাগ করাটাই সমীচীন বলে মনে করবেন। সসম্মানে সরে যাওয়াটাই তাঁর কাঙ্ক্ষিত।
অন্য দিকে রাজ্যসভায় তৃণমূলের সংসদীয় দলের সচেতক তথা জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায় বুধবার এ বিষয়ে বলেন, ‘‘দায়িত্বশীল মানুষের দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত।’’ তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র তাপস রায়ের কথায়, ‘‘জহরবাবুর এই মন্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অরাজনৈতিক।’’ তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যসভার ভোটে জহরবাবুর নির্বাচনী এজেন্ট হয়েছিলাম। আজ লজ্জা হচ্ছে।’’ তবে জহরের মন্তব্যে দলের কোনও ক্ষতি হবে বলে মানতে নারাজ তাপস।
তৃণমূল শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের কাছে গোহারান হারার পর বিজেপি নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে কার্যত লেলিয়ে দিয়েছে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের পিছনে। রাজনৈতিক প্রতিহংসা মেটানো হচ্ছে। দলের এই অবস্থায় এক জন প্রবীন আমলা এবং সাংসদ হিসাবে জহরবাবু যে আচরণ করেছেন, তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অন্য দিকে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘জহর সরকারেরা আত্মগ্লানিতে ভুগছেন। তৃণমূলের পুরনো নেতাদেরও একই অবস্থা। তাঁদের লোকে প্রশ্ন করছে, এ সবের ভাগ কত পেলি?’’