তামিলনাড়ুর গ্রামে কমলা হ্যারিসের জয় কামনা করে পোস্টার। ছবি: এএফপি।
আমেরিকায় ভোটযুদ্ধ লড়ছেন ‘ঘরের মেয়ে’। আর তাঁর জয় কামনা করে ১৪ হাজার কিলোমিটার দূরে পূজার্চনায় মেতেছে তামিলনাড়ুর গ্রাম। বিতরণ করা হচ্ছে প্রসাদও। যাঁর জন্য এত আয়োজন, তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস। কমলা জো বাইডেনের উত্তরসূরি হতে পারবেন কি না, মঙ্গলবারই তা নির্ধারণ করবেন আমেরিকার মানুষ।
গ্রামের নাম থুলাসেন্দ্রাপুরম। জেলা তিরুভারুর। চেন্নাই থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই অখ্যাত গ্রাম রাতারাতি প্রচারের আলোয় উঠে এসেছে। কারণ এই গ্রামেই জন্মেছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলার মাতামহ (দাদু) পিভি গোপালন। পরে অবশ্য কর্মসূত্রে তিনি চেন্নাই চলে যান। আরও পরে ভারতীয় কূটনীতিক হিসাবে জাম্বিয়ায় চলে যান তিনি। কমলার মা শ্যামলা গোপালনের সঙ্গে সেই অর্থে এই গ্রামের কোনও নিবিড় যোগসূত্র নেই। কারণ বাবার কর্মসূত্রে বিভিন্ন দেশে ঘুরলেও এই গ্রামে সে ভাবে আর ফেরা হয়নি শ্যামলার। তা সত্ত্বেও গ্রামের বাসিন্দারা মনে করেন কমলা তাঁদেরই ‘ঘরের মেয়ে’।
তবে প্রবীণদের অনেকের মনে আছে যে, কমলা ও তাঁর বোন মায়া যখন ছোট, তখন শ্যামলা তাঁদের এই গ্রামে নিয়ে গিয়েছিলেন। ভারতীয় খাবার রান্না করে খাইয়েছিলেন, সাজিয়েছিলেন দেশীয় গয়নায়। ২০২০ সালে কমলা যখন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হন, তখনও একই ভাবে আনন্দে মাতোয়ারা হয়েছিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে ‘ঘরের মেয়ের’ নাম ঘোষণা হওয়ার পরেও উচ্ছ্বাসের একই ছবি ধরা পড়েছিল।
সোমবার থেকেই কমলার ছবি সম্বলিত পোস্টার আর ব্যানারে ঢেকে ফেলা হয়েছে গোটা গ্রামকে। কমলার এক আত্মীয় সরলা গোপালন হ্যারিসের নামে মন্দির করার জন্য ৫০০০ টাকা দান করেছিলেন। সেই মন্দিরেই চলছে বিশেষ পুজো। সম্প্রতি কমলা জানিয়েছিলেন, তিনি দক্ষিণ ভারতীয় খাবার খেতে পছন্দ করেন। সে কথা মাথায় রেখে গ্রামের বাসিন্দারা নিজেদের মধ্যে ইডলি-সম্বর ভাগ করে খাচ্ছেন। গ্রামের এক বাসিন্দার কথায়, “তাঁর (কমলা) ভারতীয় শিকড় রয়েছে। ওঁর পূর্বপুরুষেরা আমাদের গ্রামে থাকতেন। তিনি বিশ্বের শক্তিশালী দেশের এত বড় একটি পদের জন্য লড়াই করছেন। আমরা চাই উনি জয়ী হোন।”
স্থানীয়দের আশা, কমলা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তাঁদের গ্রামের দিকে নজর পড়বে স্থানীয় প্রশাসনের। সে ক্ষেত্রে পাকা রাস্তা, পানীয় জল ইত্যাদি ন্যূনতম নাগরিক সুবিধা নিয়ে আর কোনও অভাব-অভিযোগ থাকবে না বলেও আশাবাদী তাঁরা।