—ফাইল চিত্র।
দলের ‘বিক্ষুব্ধ’-দের প্রকাশ্যে মুখ না খোলার জন্য কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব বার্তা পাঠিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও মুখ খুলে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা আনন্দ শর্মা বললেন, তাঁরা দলে ভাড়াটে নন। তাঁদেরও দলের উপরে অধিকার রয়েছে। সে কারণেই তাঁরা দলীয় সমস্যা নিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন। রাজ্যসভায় কংগ্রেসের উপ-দলনেতা আনন্দ শর্মার যুক্তি, ‘‘দু’বার লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পরে দল যে গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়েছে, এবং নেতৃত্ব নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা উপেক্ষা করা যায় না।’’
যে ২৩ জন কংগ্রেস নেতা সনিয়াকে চিঠি লিখে শীর্ষ নেতৃত্বে পুরো সময়ের সক্রিয়তা এবং সাংগঠনিক নির্বাচনের দাবি তুলেছিলেন, তার মধ্যে আনন্দ শর্মা অন্যতম। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে ওই চিঠি নিয়ে তর্ক-বিতর্কের পরে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব বার্তা পাঠায়, এ বার এ নিয়ে বিক্ষুব্ধরা মুখ বন্ধ রাখুন। এখন সামনে তাকানোর সময়।
কিন্তু পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ, আনন্দ শর্মার মতো নেতারা দলের সমস্যা নিয়ে গত কয়েক দিনে মুখ খুললেন। পৃথ্বীরাজ দু’দিন আগে বলেছেন, কংগ্রেসে পুরো সময়ের সভাপতি নেই বলে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে কংগ্রেসের ধার ও ভার কমে যাচ্ছে। এ বার আনন্দ শর্মার যুক্তি, বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা দল ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। অনেক প্রবীণ নেতা বলছেন, দলের অধঃপতন রুখতে হবে। দেশের রাজনৈতিক বিতর্কে একটা ভারসাম্য আনা জরুরি।
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল গাঁধী বিক্ষুব্ধ নেতাদের চিঠি লেখার সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সনিয়ার অসুস্থতার সময়ে কেন চিঠি পাঠানো হল, তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তোলেন। আনন্দ শর্মার যুক্তি, এই সময়ের বিষয়টা কোথা থেকে এল জানি না। লোকসভা ভোটে হারের পরে ১৫ মাস কেটে গিয়েছে। সনিয়ার অসুস্থতার জন্য বরং সকলের সই হয়ে যাওয়ার বেশ কিছু দিন পরে চিঠি পাঠানো হয়। তত দিনে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন।
কংগ্রেস নেতৃত্ব চাইছে, দলের অন্দরে যত বিক্ষোভই থাক, সংসদের বাদল অধিবেশনে যেন গোটা দল এককাট্টা থাকে। সংসদের লোকসভা ও রাজ্যসভায় কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই বৈঠক হয়েছে। বৃহস্পতিবারের ওই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, অন্যান্য সমমনস্ক বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গেও সমন্বয় তৈরির চেষ্টা হবে। ওয়ার্কিং কমিটির পরে সনিয়া লোকসভা ও রাজ্যসভায় সংসদীয় দলের নেতৃত্বে বেশ কিছু পরিবর্তন করেছেন। এতে সংসদেও কংগ্রেসের সক্রিয়তা বাড়বে বলে তাদের আশা।